৪ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে মৃত্যুঝুঁকিতে বিরল কচ্ছপ

প্রতীকী ছবি
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে ওয়েলসের তালাসরি সমুদ্রসৈকতে পাওয়া গেছে একটি বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপ। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কচ্ছপটির মূল বিচরণ এলাকা সেখান থেকে অন্তত ৪ হাজার মাইল দূরে। ৪ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যের সমুদ্রসৈকতে এসে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে প্রাণীটি। খবর বিবিসির

সম্প্রতি নিজের পোষা কুকুরকে নিয়ে সৈকতে বেড়াতে গিয়েছিলেন অ্যাশলে জেমস নামের এক ব্যক্তি। হঠাৎ তাঁর কুকুরটি ছুটে গিয়ে কেম্পস রাইডলি প্রজাতির কচ্ছপটির কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। প্রথম অ্যাশলে জেমস ভেবেছিলেন, কচ্ছপটি মারা গেছে। পরে অবশ্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে খবর দেন অ্যাশলে। তারা এসে কচ্ছপটিকে জীবিত উদ্ধার করে। ততক্ষণে প্রচণ্ড ঠান্ডায় এটির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছিল।

কেন কচ্ছপটি এখানে এসে যাত্রা সমাপ্ত করেছে, এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। বিবিসি বলছে, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের কিছু অংশ ঘূর্ণিঝড় আরওয়েনের সম্মুখীন হয়েছে। যে কারণে গত সপ্তাহে প্রবল বাতাসের মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ ফেডারেশনের (এনডব্লিউএফ) তথ্যমতে, কেম্পস রাইডলি প্রজাতির কচ্ছপ বিশ্বের সবচেয়ে ছোট সামুদ্রিক কচ্ছপ এবং এরা সবচেয়ে বেশি বিপন্নের মুখে।

এদের সাধারণত মেক্সিকো উপসাগরে দেখা যায়। সেখানেই তারা বেশির ভাগ বাসা বাঁধে।

ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) তথ্যমতে, কেম্পস রাইডলি প্রজাতির কচ্ছপগুলো আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তরে নোভা স্কোটিয়া পর্যন্ত এবং এমনকি পূর্ব-উত্তর আটলান্টিকেও পাওয়া গেছে। তবু মেক্সিকো উপসাগর থেকে ব্রিটেনের পশ্চিম উপকূলে প্রায় ৪ হাজার মাইল ভ্রমণ করা কচ্ছপটির জন্য বিশাল ভ্রমণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

এনওএএ বলছে, এই প্রজাতির কচ্ছপ ঠিক কত দিন বেঁচে থাকে, তার সঠিক তথ্য নেই। এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত এদের বাসা বানানোর সময়। এ সময় প্রাপ্তবয়স্ক নারী কচ্ছপ আরিবাদা নামে বড় সমাবেশে উপকূলে আসে।

পানির তাপমাত্রা খুব কম হলে সামুদ্রিক কচ্ছপগুলো সাধারণত ঠান্ডায় কাবু হয়ে যায়। যার ফলে তাদের শরীরে অলসতা, নিউমোনিয়া দেখা দেয় এবং মৃত্যু হতে পারে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য বিশেষ চিড়িয়াখানা (অ্যাংলেসে সি জু) কর্তৃপক্ষ আপাতত কচ্ছপটির দেখাশোনা করছে। তারা এটির নাম রেখেছে টাল্লি। ওই চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা সেবা-শুশ্রূষা করে টাল্লিকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন।

ঠান্ডায় আটকে পড়া কচ্ছপগুলোকে সারিয়ে তোলার প্রক্রিয়ার সময় প্রায়ই মারা যায় এবং যত্ন নেওয়ার প্রথম ৪৮ ঘণ্টা গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই কর্মীরা এটির সর্বোচ্চ যত্ন নেওয়ার দিকে মনযোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।