জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় হাইতির ৪ গ্যাং নেতা

হাইতির একটি পুলিশ স্টেশনে গ্যাং সদস্যদের হামলার পর সতর্ক অবস্থানে পুলিশ, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

হাইতির চারটি গ্যাংয়ের চার নেতাকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করেছে জাতিসংঘ। শুক্রবার এই চার নেতাকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করার ব্যাপারে সম্মত হয় নিরাপত্তা পরিষদ। মানবাধিকার সংকটে থাকা ক্যারিবীয় দেশটির জন্য এটি দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল।

শুক্রবার হাইতির গ্র্যান্ড রেভিন গ্যাংয়ের রেনেল দেস্তিনাকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। তাঁকে ওই গ্যাংয়ের প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ক্রেজ বারিয়ে গ্যাংয়ের নেতা ভিতেল হোমি ইনোসেন্টকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাঁকে ওই গ্যাংয়ের প্রধান নেতা বলে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নাম লেখানো অপর দুজন হলেন—ফাইভ সেগন্ডের নেতা জনসন আন্দ্রে ও ফোর হান্ড্রেড মায়োজোর নেতা উইলসন জোসেফ।

আরও পড়ুন

এর আগে শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগও এই চার ব্যক্তিকে তাঁদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করার ঘোষণা দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, শুধু ২০২২ সালেই ১ হাজার ৩৫টি যৌন নিপীড়নের ঘটনায় আন্দ্রে ও তাঁর গ্যাংকে দায়ী করা হয়েছে। বেঁচে যাওয়া ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, এসব ঘটনায় আন্দ্রে ও তাঁর গ্যাং সরাসরি দায়ী।

অর্থ বিভাগ বলেছে, আন্দ্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেস্তিনার বিরুদ্ধেও হত্যা, ডাকাতি, ধর্ষণ, লুটপাট ও ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আছে। ২০২১ সালে এক মার্কিন নাগরিককে অপহরণ করার ঘটনায়ও তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন নাগরিকদের অপহরণের ঘটনায় ভূমিকার জন্য জোসেফ ও ইনোসেন্ট—দুজনকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মার্কিন অর্থ বিভাগের বিবৃতি অনুযায়ী, অপরাধী গ্যাংগুলো এখন পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে বলে তারা জানতে পেরেছে। অপহরণ, ধর্ষণ, ডাকাতি, হত্যা ও যৌন সহিংসতার ঘটনাগুলো শিশুসহ হাইতির নাগরিকদের জন্য দৈনন্দিন হুমকির বিষয়।

এদিকে হাইতির এসব গ্যাংকে যারা অর্থায়ন করে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া এবং অস্ত্রের চোরাচালান বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ধারণা করা হয়, এসব বন্দুক ও গোলাবারুদের একটা বড় অংশ ফ্লোরিডা থেকে চোরাচালান হচ্ছে।

গ্যাংগুলোর সহিংসতার কারণে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাঁরা রাজধানীর উত্তর দিকের কৃষিজমিতে বসতি গড়েছেন। এতে খাদ্য সরবরাহের ওপর প্রভাব পড়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে, হাইতির মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই ক্ষুধার্ত।

এর আগে জাতিসংঘ শুধু হাইতির এক নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তাঁর নাম জিমি চেরিজিয়ের। তিনি সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও জি নাইন অ্যালায়েন্সের নেতা। পোর্ট-অ-প্রিন্সের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জি-পেপ অ্যালায়েন্সের সঙ্গে জি নাইন অ্যালায়েন্সের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে।