এসসিও সম্মেলন
পশ্চিমাবিরোধী জোট শক্তিশালী করতে চায় চীন ও রাশিয়া
এসসিও সম্মেলনকে মধ্য এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম হিসেবে দেখেন পুতিন ও সি।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এসসিও দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
পশ্চিমাবিরোধী জোটকে শক্তিশালী করতে ও কৌশলগত মধ্য এশিয়া অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে গতকাল বুধবার কাজাখস্তানের আস্তানায় শুরু হয়েছে দুই দিনের সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) আঞ্চলিক সম্মেলন। এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
৯ সদস্যের এসসিও নামের এ সংস্থার স্থায়ী সদস্যদেশগুলো হলো এ বছরের আয়োজক কাজাখস্তান, ভারত, চীন, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও গত বছরে যুক্ত হওয়া ইরান। এ বছর এতে সদস্য হিসেবে যুক্ত হতে পারে বেলারুশ। ২০০১ সালে ইউরেশীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংস্থা হিসেবে রাশিয়া ও চীনের উদ্যোগে এটি গঠিত হয়। এ সংস্থার অধীন যে দেশগুলো রয়েছে, সেখানে বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যার বসবাস।
গতকাল ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এবারের সম্মেলনে এসসিও সদস্যদেশগুলোর নেতারা পরস্পরের মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতা আরও গভীর করার ও এসসিওর কার্যক্রম উন্নত করতে আলোচনা করবেন। এর বাইরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলা করার পর থেকে মস্কো ও বেইজিংয়ের মধ্যে রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। এ সম্মেলনে গতকাল যোগ দেন পুতিন। এর আগে গত মঙ্গলবার এখানে এসে পৌঁছান সি। তাঁরা দুজন এসসিও সম্মেলনকে মধ্য এশিয়ায় তাঁদের কৌশলগত স্বার্থ বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম হিসেবে দেখেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও আজ বৃহস্পতিবার দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দিতে পারেন।
ক্রেমলিনের কর্মকর্তা ইউরি উশাকভ রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘এসসিওর সদস্যদেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আমরা মনে করি, এসসিও এবং ব্রিকস হচ্ছে নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরির দুটি মূল খুঁটি।’
রাশিয়া ও চীন উভয়ই বিশ্বমঞ্চে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আধিপত্যের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং চলতি সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, বেইজিং বিশ্বাস করে, এসসিও শীর্ষ সম্মেলন সব পক্ষের মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তুলতে এবং সদস্যদেশগুলোর নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে অবদান রাখতে সহায়তা করবে।
রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ‘সীমাহীন’ কৌশলগত সম্পর্কের ঘোষণা এলেও মধ্য এশিয়ায় স্বার্থ ও প্রভাব নিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতাও রয়েছে। কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কিমিনস্তান ও উজবেকিস্তান—এই পাঁচ দেশের সঙ্গে মস্কোর ঐতিহ্যগত সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু এসব দেশে চীনের অর্থনৈতিক শক্তি ও বিনিয়োগ বাড়তে থাকায় তা রুশ প্রভাবকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।