ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করতে চায় ব্রাজিলও

এই যুদ্ধ বন্ধে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘রাজনৈতিক জি-২০ জোট’ গঠনের প্রস্তাব ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার।

সফররত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানান আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান। গত শনিবার আবুধাবিতে
ছবি: এএফপি

ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে যৌথ মধ্যস্থতা নিয়ে চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আলাপ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। গতকাল রোববার তিনি এ কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এই সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করছে বলেও অভিযোগ করেছেন লাতিন আমেরিকার এই নেতা।

তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর চীন ও আমিরাত সফর করছেন লুলা। সফর শেষে এসে তিনি বলেন, যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টায় এই দুই দেশ এবং অন্যদের ‘রাজনৈতিক জি-২০ জোট গঠন’-এর উদ্যোগে শামিল হওয়া উচিত।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে অতিরিক্ত সদ্ভাব বজায় রেখে চলেন বলে অভিযোগ রয়েছে প্রবীণ এই বামপন্থীর বিরুদ্ধে। দুই দেশের (রাশিয়া ও ইউক্রেন) সিদ্ধান্তের ফলেই ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আবুধাবিতে সরকারি দোভাষীর মাধ্যমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন লুলা। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না প্রেসিডেন্ট পুতিন। ইউক্রেনের (প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির) জেলেনস্কিও যুদ্ধ বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।’

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যুদ্ধ চালিয়ে যেতে নিজেদের মতো করে অবদান অব্যাহত রেখেছে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র। তাই তাদের আলোচনার টেবিলে বসতে হবে এবং বলতে হবে, যথেষ্ট হয়েছে।’ চীন সফরের সময় লুলা অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে যুদ্ধে চালিয়ে যেতে ‘উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে’ ওয়াশিংটন।

বৈশ্বিক বাণিজ্যে ডলারের আধিপত্যেরও সমালোচনা করেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। ‘ব্রিকস’ সদস্যভুক্ত দেশগুলোর (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) মধ্যে লেনদেনের জন্য নতুন মুদ্রা চালুরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

লুলা বলেন, অগ্রসর অর্থনীতির দেশগুলোর জি-২০ জোটের মতো মধ্যস্থতার জন্য একটি জোট গঠনের বিষয়ে আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সংকটে থাকা বিশ্ব অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে জি-২০ গঠিত হয়েছে। এই যুদ্ধ বন্ধে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরেক ধরনের জি-২০ জোট গঠন এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি আমার উদ্দেশ্য এবং আমি মনে করি, আমরা দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করতে পারব।’

লুলা বলেন, ‘এই যুদ্ধ নিয়ে গতকাল (শনিবার) আমি শেখের (মোহাম্মদ বিন জায়েদ) সঙ্গে আলাপ করেছি। আমি সি চিন পিংয়ের সঙ্গে এই যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছি। আমি মনে করি, আমরা কিছু মানুষ একসঙ্গে মিলিত হয়েছি, যাঁরা যুদ্ধের চেয়ে শান্তি নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি। তাই আমি মনে করি, আমরা সফলতা পেতে যাচ্ছি।’

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যে তাঁর এই উদ্যোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এবং দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলাপ করেছেন।