অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই সৈকতে বন্দুক হামলা চালিয়েছেন বাবা–ছেলে

গতকাল সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে একটি ব্রিজে উঠে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করেন দুই ব্যক্তিছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কেহ উৎসব চলাকালে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫তে দাঁড়িয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় এ হামলা হয়। এটি গত তিন দশকে অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলা।

পুলিশ জানিয়েছে, বাবা ও ছেলে মিলে এ হামলা করেছে। ৫০ বছর বয়সী বাবা সাজিদ আকরাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং তাঁর ২৪ বছর বয়সী ছেলে নাভিদ আকরাম হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

এই ভয়াবহ ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকেরা নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করছেন। একই সঙ্গে কিছু মানুষের বীরত্বের গল্পও সামনে আসছে।

অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, ঘটনার সময় এক ব্যক্তি হামলাকারীদের একজনকে বাধা দিয়ে তাঁর কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নেন। এমন সাহসিকতার কারণে তাঁকে ‘বীর’ বলে প্রশংসা করা হচ্ছে। ৪৩ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম আহমেদ আল আহমেদ। তিনি সিডনিতে একটি ফলের দোকানের মালিক।

পুলিশ জানিয়েছে, আহমেদ এক বন্দুকধারীকে বাধা দিতে গেলে অন্য বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হন। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্রিস মিন্স এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আহমেদের সাহসিকতার কারণে অনেক মানুষ বেঁচে গেছেন।

আজ সোমবার শোকাহত মানুষজন বন্ডাই সৈকতের কাছে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে নির্মিত একটি অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে ভিড় জমান। এ সময় আরও অনেকের বীরত্বের গল্প সামনে আসে। ইহুদি নেতারাও ফুল দিতে এসেছিলেন। এ কারণে সেখানে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে ভিড় জমান অনেকে
ছবি: রয়টার্স

সিডনির বিরোধীদলীয় নেতা কেলি স্লোনের নির্বাচনী এলাকার অন্তর্ভুক্ত বন্ডাই সমুদ্রসৈকত। হামলার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি অনেক মানুষকে অন্যের জীবন বাঁচাতে ঝুঁকি নিতে দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি চোখের সামনে মানুষের বীরত্ব দেখেছি। তারা মানুষকে সাহায্য করতে এবং জীবন বাঁচাতে যা করেছে, তা এককথায় অসাধারণ।’

আরও পড়ুন

বন্ডাই এলাকার বাসিন্দা মরগান গ্যাব্রিয়েল (২৬) বলেছেন, গোলাগুলি থেকে পালিয়ে আসা কয়েকজনকে তিনি আশ্রয় দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আজকের সকালটা অনেক বিষণ্ন। আমি প্রতিদিনই এখানে আসি। সাধারণত সকালে এখানে অনেক ভিড় থাকে। মানুষ সাঁতার কাটে, সার্ফিং করে, দৌড়ায়। কিন্তু আজ সবকিছু অস্বাভাবিক নীরব। চারপাশে একটা শোকাচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজ করছে।’

১৮ বছর বয়সী ট্রেন্ট টার বলেন, হামলা শুরুর সময় তিনি সমুদ্রে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি কয়েকটি মরদেহ দেখেছি। অনুভূতিটা ছিল ভয়ংকর, ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’

আরও পড়ুন