উষ্ণ পানিতে গলে যাচ্ছে অ্যান্টার্কটিকার থোয়াইটস হিমবাহ

অ্যান্টার্কটিকার থোয়াইটস হিমবাহছবি: রয়টার্স

অ্যান্টার্কটিকার থোয়াইটস হিমবাহকে ‘ডুমস ডে গ্লেসিয়ার’ বা ‘কিয়ামতের হিমবাহ’ বলেও ডাকা হয়। গত বুধবার নেচার জার্নালে প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, অ্যান্টার্কটিকার দৈত্যকার থোয়াইটস হিমবাহের দুর্বল অংশগুলোতে উষ্ণ পানি প্রবেশ করছে। পাশাপাশি ক্রমেই বাড়তে থাকা তাপমাত্রা এ হিমবাহের গলে যাওয়া ত্বরান্বিত করছে। এই হিমবাহ পুরোপুরি গলে গেলে বিশ্বজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আধা মিটারের বেশি বেড়ে যেতে পারে।

গবেষণা কী বলছে
১৩ জন মার্কিন ও ব্রিটিশ বিজ্ঞানীর একটি দল ২০১৯ ও ২০২০ সালে প্রায় ছয় সপ্তাহের মতো এই হিমবাহে অবস্থান করে গবেষণা চালিয়েছে। পানির নিচে চলাচলে সক্ষমতাসম্পন্ন একটি  রোবটযানের মাধ্যমে তাঁরা তথ্য সংগ্রহ করেছেন। রোবটযানটির নাম আইসফিন। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো হিমবাহের বরফ গলে যেখানে সমুদ্রে মিশছে, সে স্থানের তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে এসেছে।

কর্নওয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ব্রিটনি শিমিট একটি গবেষণাপত্রে লিখেছেন, এসব চিড়ে উষ্ণ পানি জমে হিমবাহ গলে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করে তুলছে। প্রতিবছর ৩০ মিটার করে বরফ গলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শিমিট বলেন, ‘উষ্ণ পানি হিমবাহের সবচেয়ে দুর্বল অংশগুলোতে প্রবেশ করছে এবং পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের সবার উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।’

বিশ্বের হিমবাহগুলো সম্পর্কে আরও বেশি ধারণা পাওয়ার জন্য গবেষণাটি চালানো হয়েছিল। এই গবেষণার প্রকল্পটি বেশ ব্যয়বহুল। এর পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৭ লাখ ইউরো (প্রায় ৫৩০ কোটি টাকা)।

এর আগে থোয়াইটস হিমবাহের গভীরের এই অংশ নিয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না। তবে আইসফিনের বদৌলতে এবারই প্রথম ৫৮৭ মিটার গভীরের চিত্র পাওয়ার ফলে হিমবাহের চিড় কতটা ভয়াবহ, সে ধারণা পাওয়া গেল।

অবশ্য শিমিট আরেকটা গবেষণাপত্র নিয়ে কাজ করছেন। সেটিতে বলা হয়েছে, হিমবাহটির বরফ যেখানে সমুদ্রে মিশেছে, সেখানকার বরফ বছরে পাঁচ মিটার করে গলে যাচ্ছে। আগে যা ধারণা করা হয়েছিল, তার চেয়ে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো।

তবে এ নিয়েও সতর্ক করেছেন শিমিট। তাঁর মতে, ‘বরফ গলার হার কমার মানে এই না যে তা থেমে যাচ্ছে।’