এয়ার কানাডার কেবিন ক্রুদের ধর্মঘট চলছে, সঙ্গে আলোচনাও, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
ধর্মঘট করা হাজার দশেক কেবিন ক্রুর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায় বসেছে এয়ার কানাডা কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার রাতে দুপক্ষের প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ওই সংগঠন। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দুপক্ষের এটাই প্রথম আলোচনা।
বেতন বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট করছেন এয়ার কানাডার কেবিন ক্রুরা। গত শনিবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ১২টা ৫৮ মিনিটে এ ধর্মঘট শুরু হয়। এ কারণে এয়ার কানাডার সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়। এতে বিপাকে পড়ে তাদের লাখো যাত্রী।
কানাডার সরকার–সমর্থিত শিল্প সম্পর্কবিষয়ক বোর্ড এ ধর্মঘটকে ‘বেআইনি’ উল্লেখ করে কেবিন ক্রুদের গত রোববার কাজে ফিরতে বলেছিল। তবে কেবিন ক্রুরা নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেন। কাজেও ফেরেননি। নজিরবিহীন ধর্মঘট চলছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে কানাডিয়ান ইউনিয়ন অব পাবলিক এমপ্লয়িজ (সিইউপিই) বলেছে, টরন্টোয় দেশের সবচেয়ে বড় বিমানসেবা প্রতিষ্ঠান এয়ার কানাডার সঙ্গে উইলিয়াম কাপলানের মধ্যস্ততায় বৈঠক হয়েছে। বলা হয়েছে, আলোচনা কেবল শুরু হয়েছে। তাই ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়নি। ধর্মঘট শুরুর আগে দুই পক্ষের মধ্যে কোনো যোগাযোগই হয়নি।
আলোচনার বিষয়ে জানাশোনা রয়েছে এমন একটি সূত্র জানান, কেবিন ক্রুদের কাজে ফিরে আসার শর্তে আনুষ্ঠানিক মধ্যস্থতার বিষয়ে এখন আলোচনা চলছে।
কানাডার কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী প্যাটি হাজডু দুই পক্ষকে আলোচনায় বসাতে এবং এয়ার কানাডার কর্মীদের জন্য দ্রুত একটি সমন্বিত চুক্তি করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
এয়ার কানাডার সিইও মাইক রুশো গত সোমবার ধর্মঘটরত কেবিন ক্রুদের জন্য প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া ৩৮ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নেন। যদিও তিনি এটাও বলেন, ইউনিয়নের দাবির সঙ্গে এয়ার কানাডার প্রস্তাবের মধ্যে এখনো বড় ফারাক রয়ে গেছে। এ সময় আলোচনার বিষয়ে কোনো পথ দেখাননি তিনি।
এর কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী প্যাটি হাজডু এয়ার কানাডা কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ দেন। জানান, কর্মীদের বেতনের বিষয়টি নিয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ধর্মঘট তুলে নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান ও কর্মীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে করা একটি চুক্তিই হতে পারে সবচেয়ে উত্তম সমাধান।
কেবিন ক্রুদের ধর্মঘটের জেরে এখন এয়ার কানাডা কর্তৃপক্ষ, প্রতিষ্ঠানটির কর্মী এবং সরকারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় গভীর সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে সাধারণ যাত্রীদের ওপর। ধর্মঘটে এবারের পর্যটন মৌসুমে লাখো যাত্রীর ফ্লাইট ব্যাহত হচ্ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বেতন বাড়ানোর দাবিতে কেবিন ক্রুদের এই ধর্মঘট। বর্তমানে কেবিন ক্রুদের উড়োজাহাজ চলাচলের সময়ের জন্য বেতন দেওয়া হয়। ফ্লাইটের মাঝে এবং যাত্রীদের বিমানে উঠতে সহায়তা করার সময়ের জন্য কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। এই সময়ের জন্যও পারিশ্রমিক দাবি করছেন তাঁরা।