অমিক্রনের উপসর্গ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার চিকিৎসকেরা কী বলছেন

করোনাভাইরাসের প্রতীকী ছবি

দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত করোনার নতুন ধরন অমিক্রনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৮১ শতাংশের বসবাস গাওতেং প্রদেশে। এখানেই চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ডা. উনবেন পিল্লায়। গতকাল সোমবার অনলাইন এক সংবাদ সম্মেলনে সেখানকার পরিস্থিতি বর্ণনা করেন তিনি। উনবেন জানান, করোনার নতুন ধরন অমিক্রনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগেরই উপসর্গ মৃদু। খবর ওয়ান ইন্ডিয়ার।

সম্প্রতি আফ্রিকা অঞ্চলে শনাক্ত হয় করোনার নতুন ধরন বি.১.১.৫২৯। এর নাম দেওয়া হয়েছে অমিক্রন। ধারণা করা হচ্ছে, ডেলটাসহ করোনার আগের সব ধরনের চেয়ে এটি অনেক বেশি সংক্রামক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, নতুন এ ধরন বিশ্বের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তবে অমিক্রন ধরন কতটা সংক্রামক কিংবা কতটা মারাত্মক, তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে গবেষণা চলছে।

তবে করোনার নতুন ধরনের উপসর্গ কী, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় গতকাল অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করেন উনবেন পিল্লায়। এ চিকিৎসক জানান, তাঁর কর্মস্থল গাওতেং প্রদেশে। গত ১০ দিনে কোভিড-১৯ আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেখেছেন তিনি।

তবে উনবেন পিল্লায় জানান, এখন পর্যন্ত রোগীদের মধ্যে যেসব উপসর্গ দেখা গেছে, তা খুব মৃদু। জ্বর জ্বর অনুভূতি, শুকনা কাশি, জ্বর, রাতে ঘাম ও গায়ে প্রচণ্ড ব্যথার মতো উপসর্গ রয়েছে। তিনি মনে করেন, বেশির ভাগ রোগীর চিকিৎসা বাড়িতেই সম্ভব। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের টিকা নেওয়া আছে, তাঁদের অবস্থা টিকা না নেওয়া মানুষদের তুলনায় ভালো থাকতে দেখা যাচ্ছে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় যাঁরা অমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগের বয়স ২০ ও ৩০–এর কোটায়। এ বয়সী মানুষদের মধ্যে বেশির ভাগ সময় কোভিড উপসর্গ মৃদু হয় বলে দাবি করে থাকেন চিকিৎসকেরা।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার অন্য চিকিৎসকেরাও অমিক্রনের ধরন নিয়ে একই ধরনের আভাস দিচ্ছেন। কর্ণাটক রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর এমন তথ্য জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুধাকর পেশায় চিকিৎসক। গতকাল তিনি জানান, অমিক্রন ধরনের ব্যাপারে জানতে দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা সাবেক সহপাঠীদের সঙ্গে আলাপ করেছেন তিনি। তাঁরা (সহপাঠীরা) জানিয়েছেন, অমিক্রন ধরন খুব দ্রুত ছড়ালেও তা ডেলটার মতো অতটা ভয়ংকর নয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের বমি বমি ভাব বা বমি হয়, কখনো স্পন্দনের হার বেড়ে যায়। তবে এ ক্ষেত্রে স্বাদ ও গন্ধ চলে যায় না। খুব মারাত্মক না হওয়ায় এ ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুব একটা হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় না।

এর আগে গত রোববার দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপারসন ডা. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজিও জানান, অমিক্রন সংক্রমিত ব্যক্তিদের উপসর্গ মৃদু এবং ঘরে থেকেই এর চিকিৎসা সম্ভব। দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরুর দিকে অমিক্রন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করেছিলেন এ কোয়েটজিই।