আফ্রিকার বনও পুড়ছে: নাসা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আমাজনের চিরহরিৎ বনাঞ্চল প্রচণ্ড আগুনে পুড়ে ছারখার হচ্ছে। ব্রাজিলের পাশাপাশি বলিভিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে এই অগ্নিকাণ্ড। আগুন থেকে ‘পৃথিবীর ফুসফুসকে’ রক্ষা করতে গোটা বিশ্ব যখন এক জোট, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্যাটেলাইটে ধরা পড়েছে মধ্য আফ্রিকার বিরাট অংশের বনাঞ্চলে আগুন লাগার ভয়াল চিত্র। এতে বিশ্বের বনসম্পদ রক্ষায় দেখা গেছে নতুন করে উদ্বেগ। 

নাসার ফায়ার ইনফরমেশন ফর রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের তথ্যে দেখা গেছে, মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে অ্যাঙ্গোলায় অন্তত ৬ হাজার ৯০২, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে ৩ হাজার ৩৯৫টি স্থানে আগুন লেগেছে। আগুন লেগেছে মাদাগাস্কারে, জিম্বাবুয়ে ও গ্যাবনের মতো দেশগুলোতেও। একই তথ্যে ব্রাজিলের আগুন লাগার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে ২ হাজার ১২৭টি, যার বেশির ভাগ আমাজন জঙ্গলে। আমাজনের বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগার ঘটনায় জলবায়ু সংরক্ষণ নিয়ে দেখা দিয়েছে বৈশ্বিক উদ্বিগ্নতা। কারণ, বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন সরবরাহে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বনটি। আমাজনের পাশাপাশি আফ্রিকার বনাঞ্চলে আগুনের ঘটনা বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে আরও জটিল করে তুলবে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন।

তবে আফ্রিকার বনভূমির কতটা এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এখনো অস্পষ্ট। চাষের জন্য কৃষিজমি উর্বর করতে খেতের ঘাস ও গাছগাছালিতে আগুন দেওয়ার ঘটনা হাজার হাজার বছর আগের কৌশল। তবে আফ্রিকায় কৃষিজমি কমে যাওয়ায় বনাঞ্চলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে কৃষিজমি তৈরিতে সেই কৌশলই কাজে লাগাচ্ছেন কিছু অসাধু লোক। আর সেই কারণেই আফ্রিকায় বনাঞ্চলে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। কঙ্গো অববাহিকায় ১০ লাখ বর্গমাইলের বেশি এলাকার বনাঞ্চল এখন আগুনের গ্রাসে। আমাজনের পরে ‘পৃথিবীর দ্বিতীয় ফুসফুস’ বলা হয় ওই এলাকাকে। সে ফুসফুসও এবার বিপন্ন। গোটা বিশ্বের পরিবেশবিদদের তরফে চাপ তৈরি হওয়ায় জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো আমাজন রক্ষায় তৎপর হলেও আফ্রিকার কথা এখনো সেভাবে শিরোনামে আসেনি। 

জি-৭ বৈঠকে আফ্রিকায় আগুন লাগার ঘটনা তোলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। জোটের নেতাদের তিনি বলেন, সাহারা মরুভূমিসংলগ্ন এলাকায়ও জঙ্গল জ্বলছে। ব্রাজিল নিয়ে ঐকমত্য তৈরি হলেই এ বিষয় নিয়েও তাঁরা চিন্তাভাবনা করবেন। 

গত সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্রাজিলের চেয়েও ভয়াবহ আগুন লাগে কঙ্গো ও অ্যাঙ্গোলায়। কঙ্গোর জলবায়ুবিষয়ক কর্মী ও দূত তোসি এমপানু বলেছেন, আফ্রিকা আর ব্রাজিলের আগুন একই কারণে তৈরি হয়নি। আমাজনে হয়তো খরা ও জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে চিরহরিৎ বনের এই অবস্থা। তবে মধ্য আফ্রিকা কিন্তু জ্বলছে মূলত ভ্রান্ত কৃষি পদ্ধতির কারণে।