জুমার আমলে ব্যাপক রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির কথা স্বীকার রামাফোসার
জ্যাকব জুমা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতি হয়েছিল বলে স্বীকার করেছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। জুমার ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রামাফোসা। সে সময় পদ ত্যাগ না করার কারণ ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, তাতে দুর্নীতি রোধে তাঁর প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে বলে তিনি ওই পথে যাননি। বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জ্যাকব জুমা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সে সময়ে দেশজুড়ে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগের তদন্তকারী জুডিশিয়াল প্যানেলে সম্প্রতি সাক্ষ্য দেন রামাফোসা।
রামাফোসা বলেন, ‘আমার সামনে পাঁচটি পথ খোলা ছিল, পদ ত্যাগ করা, প্রতিবাদ করা, ঘটনায় জড়িয়ে পড়া, নীরব থাকা কিংবা এর বিরুদ্ধে কথা বলা।’ কিন্তু এত কিছুর পরও তিনি দায়িত্ব ছাড়েননি।
এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে রামাফোসা বলেছেন, পদ ত্যাগ করলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে পারতেন না। ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো বেশ কিছু ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য দায়িত্বে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এই নিয়ে জুডিশিয়াল প্যানেলের সামনে দ্বিতীয়বারের মতো হাজিরা দিলেন রামাফোসা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট জুমা কমিশনের সঙ্গে লুকোচুরি করেছেন। এর আগে ২০১৯ সালে তিনি একবার কমিশনের সামনে হাজির হয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
এই বছর পুনরায় তাঁকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ আদালত, কিন্তু আদালতে হাজির হতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এরপর আদালত অবমাননার অভিযোগে জুমাকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
জ্যাকব জুমা কারাগারে যাওয়ার পর থেকে সেখানে ব্যাপক লুটপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায়। জ্যাকব জুমার নিজ প্রদেশ কোয়াজুলু নাটাল ও গুয়েটাং থেকে দাঙ্গা শুরু হয়। গত মাসের দাঙ্গায় ৩৩৭ জনের বেশি নিহত হয় বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।