সুদানে সংঘাত: জ্বলছে খার্তুমের আইকনিক ভবন

সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী আধা সামরিক বাহিনীর সংঘাতে জ্বলছে জিএনপিওসি টাওয়ার। ১৭ সেপ্টেম্বর, সুদানের খার্তুমে
ছবি: এএফপি

আফ্রিকার দেশ সুদানে ক্ষমতার লড়াইয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী আধা সামরিক বাহিনীর সংঘাত ছয় মাসে গড়িয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী খার্তুমের প্রাণকেন্দ্রে আইকনিক একটি ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সময় গতকাল রোববার ভোরে খার্তুমের গ্রেটার নাইল পেট্রোলিয়াম অপারেটিং কোম্পানির (জিএনপিওসি) টাওয়ারে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। বহুতল এই বাণিজ্যিক ভবনটি খার্তুমের আইকনিক একটি স্থাপনা হিসেবে পরিচিত। এটি খার্তুমের সবচেয়ে উঁচু ভবনগুলোর একটি।

সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে এ ঘটনা ঘটল বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কাচে ঘেরা ভবন থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, এতে কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, এসব নিয়ে কিছুই জানা যায়নি।

সবশেষ সংঘাতে খার্তুমে জিএনপিওসি টাওয়ার ছাড়াও সুদানের বিচার মন্ত্রণালয় ও সুদানিস স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড মেট্রোলজি অর্গানাইজেশন ভবন আগুনে পুড়েছে।

গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সুদানে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। জেনারেল আবদেল ফাতাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বাধীন আরএসএফ প্রকাশ্যে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে দেশটিতে থেমে থেমে সংঘাত চলছে।

দুই পক্ষের এই সংঘাত খার্তুম শহরকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে। বৃহত্তর খার্তুমে আরএসএফ সেনারা অনেক বেসামরিক ঘরবাড়ি দখলে নিয়ে সেগুলোকে নিজেদের ঘাঁটিতে পরিণত করেছেন। অধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, এ কারণে দেশটির সেনাবাহিনী বেসামরিক এলাকাতেও বোমা হামলা চালিয়েছে।

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলের দারফুর অঞ্চলে সংঘাত জাতিগত সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘ ও অধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, আরএসএফ ও মিত্র আরব মিলিশিয়ারা আফ্রিকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর ওপর ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

গত আগস্টে প্রকাশিত জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতে চার হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

তবে চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা বলছেন, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। গত মাসে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, সুদানে চলমান সংঘাতে দুই পক্ষই বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, যৌন নির্যাতনসহ নানা ধরনের যুদ্ধাপরাধ করেছে।