ল্যারির কাছে এলেই পুরোনো পোশাক হয়ে যায় নতুন

ল্যারি জাফারু মোহাম্মদ
ছবি: ডয়চে ভেলে

আফ্রিকার দেশ ঘানায় প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ছয় হাজার টন পুরোনো ও ব্যবহৃত পোশাক আমদানি হয়ে থাকে। স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় ‘অব্রোনি ওয়ায়ু’—যার অর্থ ‘মৃত শ্বেতাঙ্গ মানুষের কাপড়’। ঘানার ফ্যাশন ডিজাইনার ল্যারি জে এসব কাপড় দিয়ে নতুন পোশাক তৈরি করেন।

ল্যারি জে ঘানার সবচেয়ে বড় ব্যবহৃত কাপড়ের বাজার কাটামান্টুর একজন নিয়মিত ক্রেতা। ওই বাজারে প্রায় ৩০ হাজার ব্যবসায়ী কাজ করেন। সেখান থেকে কাপড় কিনে ল্যারি সেগুলো দিয়ে আধুনিক ক্রেতাদের জন্য ফ্যাশনেবল কাপড় তৈরি করেন।

ল্যারি জাফারু মোহাম্মদ বলেন, ‘ব্যবহৃত কাপড় ব্যবহার করার প্রথম কারণ, আমাদের ব্র্যান্ড ল্যারি জে, আমরা পরিবেশের কথা অনেক ভাবি। সে কারণে পুরোনো কাপড় যেন যেখানে-সেখানে পড়ে না থাকে, পানিতে মিশতে না পারে, সেই চেষ্টা করি। তাই স্থানীয় মার্কেট থেকে পুরোনো কাপড় কিনে আমরা বাসায় এনে সবাই মিলে বাছাই করি।

এরপর সেগুলো কারিগরদের কাছে নিয়ে যাই। বেশির ভাগ কারিগর বুরকিনা ফাসো বা মালি বা সেনেগাল থেকে এসেছেন। তাঁরা এসব কাপড়ে তাঁদের টাইডাই দক্ষতা কাজে লাগান। এভাবে ল্যারি জে ব্র্যান্ডের কাপড় তৈরি হয়।’

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে প্রায় ২১ কোটি ১০ লাখ ডলারের পুরোনো কাপড় আমদানি করেছিল ঘানা। বেশির ভাগই এসেছিল যুক্তরাজ্য, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন থেকে। এসব কাপড়ের মধ্যে যেগুলোর মান খুব নিম্ন, সেগুলো ফেলে দেওয়া হয়, যা আবর্জনার স্তূপে বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ায় ও জলাশয়ে গিয়ে পড়ে।

ল্যারি বলেন, ‘ব্র্যান্ডের ডিজাইনার হিসেবে আমার অনুপ্রেরণার জায়গা হলো, আমি আমার পরিবেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পারছি। এ ছাড়া অনেককে চাকরি দিতে পারছি। ব্র্যান্ডটি মূলত শিল্প, বিভিন্ন আফ্রিকান সংস্কৃতি ও প্রকৃতির দ্বারা অনুপ্রাণিত।

এ সবকিছু আমাদের ডিজাইনের নান্দনিকতার সঙ্গে যুক্ত হয়। স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা পশ্চিমা কাপড়ের সঙ্গে আমাদের নকশা মিলিয়ে আমরা কাপড় তৈরি করি। এটাই ঘানার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণে আমাদের অবদানের গল্প।’

পরিবেশে বর্জ্যের পরিমাণ কমাতে পুরোনো, ব্যবহৃত কাপড়ের আপ-সাইক্লিং করা উচিত বলে মনে করেন ল্যারি জে।