ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের আঘাত ও বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট বন্যায় এভাবেই শত শত বাড়িঘর ধসে পড়েছে। গতকাল লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দারনা শহরে
ছবি: এএফপি

ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় দুটি বাঁধ ধসে লিবিয়ার দারনা শহরের ৮৯১টি ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির জাতীয় ঐক্যের সরকারের একটি টিমের দেওয়া প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভয়াবহ ওই বন্যায় ২১১টি ভবন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাদায় দেবে যায় আরও ৩৯৮টি ভবন। বন্যায় বিধ্বস্ত শহরটির মোট ভবনের চার ভাগের এক ভাগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

লিবিয়ায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন স্বজনেরা

১০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল আঘাত হানে। এতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় দুটি বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। দুর্যোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্দরনগরী দারনা।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, দারনায় মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ৩০০ দাঁড়িয়েছে। এখনো ১০ হাজারের মতো মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। দারনার মেয়রের আশঙ্কা, প্রাণহানির সংখ্যা ২০ হাজারে গিয়ে ঠেকতে পারে।

এখনো ভেসে আসছে লাশ

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভয়াবহ বন্যার এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনো নিখোঁজদের উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ভূমধ্যসাগরীয় শহরটির সৈকতে এখনো ভেসে আসছে মরদেহ। ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপেও মরদেহ পাওয়া যাচ্ছে।

গত শনিবার উপকূলীয় এলাকায় উদ্ধারকারী দলকে পথ করে দিতে কাদা ও ধ্বংসস্তূপে বন্ধ হয়ে যাওয়া সড়ক পরিষ্কার করতে দেখা যায়। এ ছাড়া সাগরে ভেসে থাকা মরদেহ শনাক্তে হেলিকপ্টার থেকে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের শনাক্ত করার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা কামাল আল-সিবি বলেন, গত তিন দিনে সৈকতে ভেসে আসা ৪৫০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ১০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। আর এটি খুব খুবই জটিল।

আরও পড়ুন

সড়কে-সমুদ্রে মরদেহ, লিবিয়ায় ২০ হাজার মৃত্যুর শঙ্কা

মানবিক সহায়তায় জোর

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাণঘাতী এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রায় এক সপ্তাহ পর এখন বেঁচে যাওয়া লোকদের সহায়তা প্রদানের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে শুরু করেছে। বন্যা–পরবর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে জরুরি সেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

জাতিসংঘ, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আন্তর্জাতিক সহায়তা আসতে শুরু করেছে। এতে বেঁচে ফেরা লোকজনের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরছে।