সুদানে ব্রিটিশ নাগরিককে স্নাইপারের গুলি, অনাহারে মারা গেলেন স্ত্রী

সুদানে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে চলছে সংঘাত
ছবি: রয়টার্স

সুদানে চলছে রক্তক্ষয়ী সংঘাত। সেখান থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে অনেক দেশ। তবে সে সৌভাগ্য হয়নি যুক্তরাজ্যের নাগরিক আবদাল্লা শোলগামির। বসবাস করতে হচ্ছিল তুমুল সংঘাতের মধ্যেই। সম্প্রতি রাজধানী খার্তুমে স্নাইপারের গুলিতে আহত হন তিনি। আর অনাহারে মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রীর।

আবদাল্লা শোলগামির বয়স ৮৫ বছর। খার্তুমে যুক্তরাজ্যের দূতাবাসের কাছেই ৮০ বছর বয়সী স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। স্ত্রী আলাওয়েয়া রিশান একজন প্রতিবন্ধী। সংঘাত শুরু হওয়ার পর যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের বলা হয় খার্তুমের বাইরে ৪০ কিলোমিটার দূরে একটি স্থানে যেতে। সেখান থেকেই তাঁদের উড়োজাহাজে করে নিরাপদে নেওয়া হবে।

তবে সংঘাতের মধ্যে ওই স্থানে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা করে দেয়নি যুক্তরাজ্য দূতাবাস। বৃদ্ধ শোলগামি ও তাঁর স্ত্রী আলাওয়েয়াকে থেকে যেতে হয় খার্তুমে। পড়েন অনাহারের মুখে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে সাহায্যের খোঁজে বের হন শোলগামি। প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে সঙ্গে নিতে পারেননি। কারণ, ওই এলাকা ঘিরে মোতায়েন করা একাধিক স্নাইপার বন্দুক।

সেদিন বাইরে বের হওয়ার পর শোলগামির হাত, বুক ও পিঠে স্নাইপার বন্দুকের গুলি লাগে। আহত অবস্থায় তাঁকে খার্তুমেই পরিবারের আরেক সদস্যের কাছে নেওয়া হয়। পরে তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে মিসরে চিকিৎসা নিচ্ছেন শোলগামি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর স্ত্রীর। বাড়িতেই অনাহারে মৃত্যু হয় তাঁর।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শোলগামির নাতনি আজহার। তিনি বলেন, ‘আমার দাদা–দাদির সঙ্গে যা হয়েছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধ। এ অপরাধ শুধু র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) বা সুদান সেনাবাহিনী করেনি, যুক্তরাজ্যের দূতাবাসও এর সঙ্গে জড়িত। কারণ, আমার দাদা–দাদির সঙ্গে যা হয়েছে, তা একমাত্র তারাই ঠেকাতে পারত।’

আরও পড়ুন

সুদানে সংঘাতটা শুরু হয়েছে গত ১৫ এপ্রিল, ক্ষমতা দখলের দ্বন্দ্ব থেকে। একদিকে সেনাবাহিনী, অন্যদিকে আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফ। একসময় মিত্র ছিল দুই বাহিনী। ২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে তারা। কিন্তু আরএসএফকে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা নিয়ে সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। সেখান থেকেই শুরু সংঘাতের।

আরও পড়ুন

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সুদানে সংঘাতের মধ্যে বিপদে পড়া লোকজন নিয়ে যুক্তরাজ্যের শেষ উড়োজাহাজটি ৩ মে ছেড়ে আসে। দেশটি থেকে ৩০টি ফ্লাইটে মোট ২ হাজার ৪৫০ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও তাঁদের ওপর নির্ভরশীল মানুষেরা।

আরও পড়ুন