উগান্ডায় তরুণের বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগ, হতে পারে মৃত্যুদণ্ড
আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় এক তরুণের (২০) বিরুদ্ধে ‘গুরুতর সমকামিতা’য় জড়ানোর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। দেশটিতে সমকামবিরোধী (এলজিবিটিকিউ) কঠোর আইন পাসের পর এ ধরনের অভিযোগ এটাই প্রথম। নতুন আইনের আওতায় এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
যে তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁর নাম-পরিচয় জানানো হয়নি। ১৮ আগস্ট তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এজাহারে বলা হয়েছে, ওই তরুণ ৪১ বছর বয়সী এক পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন, যা উগান্ডার আইনে নিষিদ্ধ। তবে অভিযোগপত্রের কোথাও বলা হয়নি, এই কর্মকাণ্ডকে কেন ‘গুরুতর’ বিবেচনা করা হচ্ছে।
দেশটির পাবলিক প্রসিকিউশনস বিভাগের পরিচালকের দপ্তরের মুখপাত্র জ্যাকুলিন ওকুই বলেন, দেশে যেহেতু এটা মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ, তাই ১৮ আগস্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। পরে ওই তরুণকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
তবে মামলাটি নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি জ্যাকুলিন। অভিযুক্তের আইনজীবী জাস্টিন বালয়া বলেন, নতুন এই আইন সংবিধানপরিপন্থী। আইনটি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বিচারক এখনো আবেদনটি গ্রহণ করেননি।
উগান্ডায় গত মে মাসে পাস হয় ‘অ্যান্টি–হোমোসেক্সুয়ালিটি বিল ২০২৩’। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউয়ারি মুসেভিনির সই করার মধ্য দিয়ে বিলটি আইন হিসেবে কার্যকর করা হয়। নতুন এই আইনে সমকামিতার শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর বারবার সমকামিতায় জড়ালে হতে পারে মৃত্যুদণ্ড।
নতুন এই আইনের কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ওই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, এই আইন ‘সর্বজনীন মানবাধিকারের দুঃখজনক লঙ্ঘন’। আইনটি প্রত্যাহার করা না হলে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে উগান্ডাকে দেওয়া সহায়তা ও বিনিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
চলতি মাসের শুরুতে বিশ্বব্যাংক জানিয়ে দেয়, উগান্ডাকে নতুন ঋণ দেওয়া বন্ধ রাখবে সংস্থাটি। কেননা, উগান্ডায় পাস হওয়া এলজিবিটিকিউ-বিরোধী আইনটি বিশ্বব্যাংকের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
উগান্ডা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১৯৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ২৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। আর আফ্রিকার ৩০টির বেশি দেশে সমকামিতা নিষিদ্ধ।