মাদাগাস্কারের সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহী সেনাদের হাতে

মাদাগাস্কারজুড়ে জেন-জিদের নেতৃত্বে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে সামরিক যান নিয়ে যোগ দিয়ে এক সেনার উল্লাস। শনিবার দেশটির রাজধানী আন্তানানারিভোতেছবি: রয়টার্স

মাদাগাস্কারে সরকারবিরোধী জেন-জিদের বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছে সেনাবাহিনীর একটি অংশ। গতকাল রোববার বিদ্রোহী ওই সেনা ইউনিটের পক্ষ থেকে মাদাগাস্কারের পুরো সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা বলেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চলছে।

মাদাগাস্কারের যে বিদ্রোহী সেনা ইউনিট সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, সেটি ক্যাপস্যাট নামে পরিচিত। এ ইউনিট প্রশাসনিক ও কারিগরি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত। গত শনিবার সেনাবাহিনীর এই ইউনিটটি কর্তৃপক্ষের আদেশ উপেক্ষা করে রাজধানী আন্তানানারিভোতে জমায়েত হওয়া হাজার হাজার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীর সঙ্গে যোগ দেয়।

বিদ্যুৎ ও পানির সংকটকে কেন্দ্র করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মাদাগাস্কারে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। শনিবার তরুণদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকারীরা প্রথমবারের মতো মাদাগাস্কারের রাজধানী শহরের মে থার্টিন চত্বরে প্রবেশ করেন। চলমান এ বিক্ষোভে এ পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় জমায়েতগুলোর একটি এটি। এর আগে ইউনিটটির পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি করার নির্দেশ না মানার ঘোষণা দেওয়া হয়।

সম্প্রতি কেনিয়া ও নেপালে হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভের অনুপ্রেরণায় ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এমন বিক্ষোভ হচ্ছে। কেনিয়া ও নেপালের ওই বিক্ষোভ জেন-জি বিক্ষোভ হিসেবে পরিচিত। মাদাগাস্কারের পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার পর কিছুসংখ্যক সেনাসদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিক্ষোভকারীরা তখন সেনাসদস্যদের স্বাগত জানান এবং উল্লাস প্রকাশ করেন।

গতকাল ক্যাপস্যাট কর্মকর্তারা এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, এখন থেকে মাদাগাস্কার সেনাবাহিনীর সব আদেশ—হোক তা স্থল, বিমান বা নৌ—ক্যাপস্যাট সদর দপ্তর থেকেই জারি হবে। কর্মকর্তারা বলেন, তাঁরা জেনারেল ডেমোস্থেন পিকুলাসকে সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। অন্য ইউনিটগুলো বা বর্তমান সামরিক কমান্ড থেকে এ তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

এর আগে আন্তানানারিভো শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি সেনা ব্যারাকে সেনাসদস্যদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। ওই সময় মাদাগাস্কারের সেনাবাহিনীর বিশেষ ইউনিট সিএপিএসএটির সেনাসদস্যরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভকারীদের করা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশের আবেদন জানান, যা বিরল ঘটনা। কারণ, ২০০৯ সালে রাজোয়েলিনার উত্থানের ক্ষেত্রে এই সিএপিএসএটি ইউনিটের মুখ্য ভূমিকা ছিল।