মরক্কোয় ধ্বংসাবশেষে চলছে উদ্ধার অভিযান, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১২২

মরক্কোর দুর্গম পাহাড়ি গ্রামগুলোর অনেক বাড়িঘরই কাদামাটির তৈরি ইট দিয়ে বানানো
ছবি: এএফপি ফাইল ছবি

মরক্কোতে ভূমিকম্পের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গতকাল রোববার রাতে সরকারিভাবে মৃতের নতুন সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে। শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে কমপক্ষে ২ হাজার ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে ২ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসাবশেষে জীবিত ব্যক্তিদের খোঁজে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা। স্থানীয় উদ্ধারকারী ব্যক্তিদের সহযোগিতা করতে বিদেশি উদ্ধারকারী ব্যক্তিদের প্রথম দলটি স্পেন থেকে মরক্কোর উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

গত শুক্রবার মরক্কোর স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে পর্যটন শহর মারাকেশ থেকে ৭২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে এযাবৎকালে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প এটি। ভূমিকম্পে অ্যাটলাস মাউন্টেন অঞ্চলের কিছু পাহাড়ি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

গতকাল একই অঞ্চলে ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পন বা পরাঘাত (আফটার শক) অনুভূত হয়েছে। এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫। এতে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এএফপির একটি প্রতিনিধিদলের বর্ণনা অনুযায়ী, মারাকেশ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের পাহাড়ি গ্রাম তাফেঘাঘতে প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। হাতে গোনা কয়েকটি ভবন এখনো দাঁড়িয়ে আছে।

আরও পড়ুন

দুর্গম পাহাড়ি গ্রামগুলোর অনেক বাড়িঘরই কাদামাটির তৈরি ইট দিয়ে বানানো।
কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল আল হাউস প্রদেশের দুটি গ্রামে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে। মরক্কোর সরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে ১৮ হাজারের বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মরক্কোর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে হতাহত ব্যক্তিদের খুঁজছেন। আহত ব্যক্তিদের জন্য রক্তদান করতে মরক্কোর নাগরিকেরা মারাকেশের হাসপাতালগুলোয় ছুটে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন

স্পেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ৫৬ উদ্ধারকারীর একটি দল উড়োজাহাজে জারাগোজা থেকে মারাকেশের উদ্দেশে রওনা করেছে। তল্লাশি চালাতে তাদের সঙ্গে চারটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরও পাঠানো হয়েছে। স্পেনের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি দেশ মরক্কোর জনগণকে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং ইউরোপীয় কমিশন থেকেও সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।