খার্তুমে পুলিশের সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লড়াই, নিহত ১৪

খাতুর্মের রাস্তায় সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান। খার্তুম পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর তাদের বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে
ছবি: এএফপি

যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানের রাজধানী খার্তুমে পুলিশের সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির দুই পক্ষের মধ্যকার লড়াইয়ে অন্তত ১৪ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। আজ সোমবার অধিকারকর্মীরা এ তথ্য জানান।

গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে সুদানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চলছে আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ)। গতকাল রোববার আরএসএফ ঘোষণা দেয়, তারা পুলিশ সদর দপ্তর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে।

আরএসএফ এক বিবৃতিতে বলে, ‘সদর দপ্তর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এবং আমরা প্রচুর যানবাহন (পিকআপ ট্রাক, সশস্ত্র যান ও ট্যাংক) অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছি।’

অধিকারকর্মীদের একটি নেটওয়ার্কের তথ্য মতে, গত রোববার ওই এলাকায় দুই শিশুসহ ১৪ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। এই নেটওয়ার্কটি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছে।

নেটওয়ার্ক কমিটি জানায়, খার্তুমের দক্ষিণে আবাসিক এলাকায় ‘বুলেট, বিমান হামলা বা গোলাগুলিতে’ আহত হয়েছে ২১৭ জন। তাদের মধ্যে ৭২ জনের অবস্থা গুরুতর।

মূল যুদ্ধক্ষেত্রের কাছাকাছি হাসপাতালগুলোর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশেরই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া কিছু কিছু হাসপাতাল বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর অন্যগুলো যোদ্ধাদের দখলে চলে গেছে। খুব অল্প কয়েকটি হাসপাতাল কাজ করছে। তবে সেখানে চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে এক সেনা কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, আরএসএফের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো যদি তাদের এই কৌশলগত স্থাপনার দখল ধরে রাখতে পারে, তাহলে তা খার্তুম যুদ্ধে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্টের তথ্যমতে, দুই মাসের বেশি সময় ধরে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও আরএসএফের প্রধান সাবেক মিলিশিয়া নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর মধ্যে চলা ক্ষমতার লড়াইয়ে প্রায় ২ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জানান, খাতুর্মের পুলিশ সদর দপ্তরটি রাজধানীর দক্ষিণাংশে অবস্থিত। এর মধ্য দিয়ে আরএসএফ শহরের দক্ষিণের প্রবেশদ্বারে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার সুযোগ পেয়ে গেছে। খার্তুমের দক্ষিণে সেনাবাহিনীর আরেকটি অতিগুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি রয়েছে। তাই সেখানে আধা সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি তাদের (সেনাবাহিনীর) জন্য এক বড় হুমকি।

একটি সেনা সূত্র জানায়, আরএসএফ পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে লড়াইয়ে ৪০০ জনের বেশি সদস্য হারিয়েছে। তবে আরএসএফ এ–সংক্রান্ত কোনো তথ্য দেয়নি।