সুদানে ক্ষমতার লড়াই: ৫৬ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত

অভ্যুত্থানচেষ্টার জেরে সুদানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষ বাধে।
ছবি: এএফপি

সুদানে সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে অন্তত ৫৬ জন বেসামরিক ব্যক্তির নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল শনিবার দেশটির সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। সুদানের চিকিৎসকদের একটি সংগঠন বলেছে, বিভিন্ন শহর ও অঞ্চলে সহিংসতায় অন্তত ৫৬ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সংঘর্ষে বেশ কিছু সামরিক সদস্য নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে কিছুসংখ্যক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আরও পড়ুন

চিকিৎসকদের সংগঠনটি আরও বলেছে, সহিংসতায় কমপক্ষে ৫৯৫ জন আহত হয়েছেন।

সংঘাতে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে জাতিসংঘের তিন কর্মী রয়েছেন। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের কাবকাবিয়া এলাকার একটি সামরিক ঘাঁটিতে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় তাঁরা নিহত হন।

সুদানের রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সেনা সদর ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে রাজধানীতে ১৭ বেসামরিক নাগরিকসহ ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠনটি।

সুদানের গণতন্ত্রে ফেরার একটি প্রস্তাব নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে চলা উত্তেজনা এখন সংঘাতে রূপ নিল।

আরও পড়ুন

সেনাবাহিনী ও আরএসএফ উভয়ই দাবি করেছে, তারা রাজধানী খার্তুমের বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে এসব স্থানে রাতভর লড়াই চলছিল।

আজ রোববার ভোরে খার্তুমসংলগ্ন ওমদুরমান ও নিকটবর্তী বাহরি শহরে ভারী কামানের গোলার শব্দ শোনা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা লোহিত সাগরের তীরবর্তী পোর্ট সুদান শহরেও গোলাগুলি হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, সামরিক উড়োজাহাজগুলো আরএসএফের ঘাঁটিতে হামলা চালাচ্ছে।

দেশটির বিমানবাহিনী গতকাল রাতে সাধারণ মানুষকে তাদের বাড়িতে অবস্থান করতে বলে। পুরো পরিস্থিতি বুঝতে তারা রাতে আকাশ থেকে আরএসএফের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে।

রাজধানী খার্তুমের বাসিন্দারা বিবিসিকে তাঁদের আতঙ্ক ও ভয়ের কথা জানিয়েছেন। এক অধিবাসী বলেছেন, তাঁর পাশের বাড়িতেই গুলি চালানো হয়েছে।

২০২১ সালের অক্টোবরের একটি অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক জেনারেলরা সুদান পরিচালনা করছেন। এই জেনারেলদের নেতা সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। উপনেতা আরএসএফের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। এই দুটি পক্ষের মধ্যেই এখন লড়াই চলছে।

জেনারেল হেমেদতি বলেছেন, সব সেনাঘাঁটি দখল না করা পর্যন্ত তাঁর সেনারা লড়াই চালিয়ে যাবেন।

জবাবে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, আরএসএফ বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো আলোচনা নয়।

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও রাশিয়া অবিলম্বে এ লড়াই বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

বুরহান ও হেমেদতির সঙ্গে কথা বলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি তাঁদের সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।