নেলসন ম্যান্ডেলাকে স্মরণ করছে বিশ্ব

বর্ণবাদবিরোধী অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা
ছবি: রয়টার্স

‘নেলসন ম্যান্ডেলা আন্তর্জাতিক দিবস’ আজ মঙ্গলবার ১৮ জুলাই। এই দিনে বর্ণবাদবিরোধী অবিসংবাদিত এই নেতা পৃথিবীতে আসেন। নানা আয়োজনে এ বছর দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। নেলসন ম্যান্ডেলা দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘তোমার মধ্য দিয়েই বাঁচে ঐতিহ্য: জলবায়ু, খাদ্য ও সংহতি’।

নেলসন ম্যান্ডেলা আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন সাহস ও দৃঢ়তার মূর্তপ্রতীক। অসামান্য অর্জনের অধিকারী অসাধারণ এক মানবতাবাদী নেতা।’

নেলসন ম্যান্ডেলা ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেন। তিনি আফ্রিকার আশা ও ঐক্যের প্রতীকে পরিণত হন। এই মহান নেতাকে সম্মান জানিয়ে ২০০৯ সালে তাঁর ৯১তম জন্মদিনে ১৮ জুলাইকে ‘আন্তর্জাতিক নেলসন ম্যান্ডেলা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ।

দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের কাছে ‘মাদিবা’ হিসেবে পরিচিত ম্যান্ডেলা তরুণ বয়সে চলে আসেন জোহানেসবার্গে। সেখানে তিনি আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের যুব শাখার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে। একই সঙ্গে তিনি কাজ করেন আইনজীবী হিসেবেও। পরবর্তীকালে ১৯৪৪ সালে ইয়ুথ লিগ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন ম্যান্ডেলা।

১৯৬২ সালে ম্যান্ডেলাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘ ২৭ বছর তাঁকে কারাগারে বন্দী থাকতে হয়। এর মধ্যে ১৮ বছরই কাটাতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার কুখ্যাত রোবেন দ্বীপের কারাগারে।

এরপর ১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কারাগার থেকে মুক্ত হন ম্যান্ডেলা। কারাগার থেকে বের হয়ে নিজ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন। ম্যান্ডেলা এমন এক দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন দেখেন, যেখানে সব জাতি, সব বর্ণের মানুষ সমান সুযোগ নিয়ে একসঙ্গে থাকতে পারবে।

১৯৯৪ সালের নির্বাচনে দক্ষিণ আফ্রিকায় গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হন ম্যান্ডেলা। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে আর প্রার্থী হতে রাজি হননি তিনি। এর আগে ১৯৯৩ সালে এফ ডব্লিউ ডি ক্লার্কের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান এই বর্ণবাদবিরোধী নেতা।

অসমসাহস, দক্ষ নেতৃত্ব ও নিঃস্বার্থ নীতির জন্য সারা বিশ্বের মানুষ ম্যান্ডেলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। শান্তির পক্ষে কাজ করা এবং আফ্রিকার নবজাগরণে ভূমিকা রাখার জন্য তিনি বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।