জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উচ্চ ঝুঁকিতে আফ্রিকার ৯৮ শতাংশ দেশের শিশু: ইউনিসেফ

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বড় সংকটে রয়েছে আফ্রিকার শিশুরা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ভুগছে সারা বিশ্ব। বড় সংকটে রয়েছে আফ্রিকার শিশুরা। মহাদেশটির ৪৯টি দেশের ৪৮টির শিশুরাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উচ্চ অথবা অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল—ইউনিসেফের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত শুক্রবার প্রতিবেদনটি ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

ইউনিসেফের গবেষণায় শিশুদের ওপর ঘূর্ণিঝড় ও দাবদাহের মতো জলবায়ু ও আবহাওয়ার বিভিন্ন বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রভাব কতটা পড়ছে, তার ভিত্তিতে দেশগুলোকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। দেখা গেছে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র, চাদ, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া ও গিনি বিসাউয়ের শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

শিশুদের এসব ঝুঁকির বিপরীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমন্বয়ে গঠিত জলবায়ু তহবিলের (এমসিএফ) অর্থ কীভাবে খরচ করা হচ্ছে, তা-ও ইউনিসেফের গবেষণায় খতিয়ে দেখা হয়েছে। দেখা গেছে, এই তহবিলের মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ অর্থ শিশুদের পেছনে ব্যয় হচ্ছে, যা প্রতিবছরে গড়ে মাত্র ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।

বিষয়টি নিয়ে আফ্রিকার পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের উপপরিচালক লিয়েকে ভ্যান ডি উইয়েল বলেন, এটি পরিষ্কার যে আফ্রিকার সমাজের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যদের জলবায়ু পরিবর্তনের কঠোর প্রভাবের খেসারত দিতে হচ্ছে। শারীরিক দুর্বলতা ও বিভিন্ন জরুরি সামাজিক সেবা পাওয়ার সুযোগ কম থাকায় তারা এই পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সবচেয়ে কম সক্ষম। এই শিশুরা যেন সারা জীবন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতাগুলো সামাল দিতে পারে, সে জন্য তাদের লক্ষ্য করে তহবিলে অর্থ খরচে গুরুত্ব দিতে হবে।  

ইউনিসেফের প্রতিবেদনে আরেকটি উদ্বেগের বিষয় উঠে এসেছে। তা হলো স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে তলানির দিকে থাকা দেশগুলোর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শিশুদের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, এসব দেশের শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কতটা ঝুঁকিতে রয়েছে।

জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচির (ইউএনইপি) আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক রোস ময়েবাজা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য তরুণেরা সবচেয়ে কম দায়ী। আর আফ্রিকায় তাদেরই এর সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলো নিয়ে ভুগতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশকে সাহায্য করতে ইউএনইপি কাজ করছে। একই সঙ্গে প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে দ্রুত পরিবর্তন হওয়া জলবায়ুতে একটি স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।