জলবায়ু সম্মেলনে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য সহায়তা তহবিল গঠনের দাবি

সময় ফুরিয়ে আসছে, অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে অধিকারকর্মীদের বিক্ষোভ। গতকাল মিসরের শার্ম আল-শেখে কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনকেন্দ্রের বাইরে।
ছবি: রয়টার্স

জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে সৃষ্ট ক্ষতির শিকার হয়েছে অনেক দরিদ্র দেশ। এ থেকে তাদের উদ্ধারে একটি তহবিল প্রয়োজন। মিসরের শার্ম আল-শেখে চলমান কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলন থেকেই এ তহবিল গঠন করতে হবে বলে দাবি উঠেছে। বৃহস্পতিবার জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেওয়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর মন্ত্রীরা এ দাবি তোলেন। এদিক আজ সম্মেলনে প্রথম খসড়া চুক্তি প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের জলবায়ু সংস্থা। তবে এর বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডার পরিবেশমন্ত্রী মলউইন জোসেপ বলেন, এবারের কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ (কপ) সম্মেলনে ক্ষতিপূরণবিষয়ক কোনো তহবিল গঠন করা না গেলে তা পরিবেশ সুরক্ষা ও মানবতার জন্য কঠোরভাবে কাজ করা মানুষের সঙ্গে প্রতারণার শামিল হবে।

জলবায়ু বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ও ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ তহবিল চাওয়া হলেও ধনী দেশগুলো এর বিরোধিতা করে আসছে। ধনী দেশগুলোর আশঙ্কা, এ ধরনের কোনো চুক্তি হলে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ইতিহাসের কারণে তাদের বিশাল আর্থিক দায়বদ্ধতার সৃষ্টি হবে।

বিশ্বের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের মুখপাত্র ঘানার কোকোফু বলেন, আলোচনায় আর্থিক সহায়তার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতির কথা বলা হয়নি। যদি বিষয়টি ঠিক করা না হয়, তবে সম্মেলন ব্যর্থ হবে।

তবে জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে এখনো বিভক্তি রয়েছে। দেশগুলোর প্রতিনিধিরা কপ-২৭ সম্মেলনে কোনো চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেননি। জলবায়ু অর্থায়নসহ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে সরে আসা নিয়ে আলোচনা করেন প্রতিনিধিরা। পৃথক আলোচনায় বিশ্বের মিথেন নির্গমন কমানোর চুক্তিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলোর মন্ত্রীরা অংশ নেন। তাঁরা ২০২০ সাল নাগাদ মিথেন নির্গমন ৩০ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, কয়েকটি দেশ তাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরেছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশ মিথেন গ্যাস নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক চুক্তিতে সই করেছে।

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে গত বছরের কপ-২৬ সম্মেলনের বিষয়গুলোই এবারের সম্মেলনে গুরুত্ব পেয়েছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার যে লক্ষ্য, তার ওপরই জোর দেওয়া হচ্ছে এবারেও। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্যারিসে কপ-২১ নামের একটি সম্মেলনে জলবায়ু চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হন বিশ্বনেতারা। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ২০০টি দেশ এতে স্বাক্ষর করে।

শুক্রবার মিসরের শার্ম আল-শেখে পর্দা নামছে এ সম্মেলনের। তবে এখন পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই। দেশগুলো এবারের সম্মেলনে একটি কার্যকর জলবায়ু চুক্তি কিংবা ঘোষণার বিষয়ে একমত হতে পারেনি। তাই দেশগুলোর কাছে দ্রুত কার্যকর ও সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। ২০২০ সালের পরবর্তী সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে একটি ফ্রেমওয়ার্ক ঘোষণা করার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন