আফ্রিকার তিন দেশের কোটি মানুষ চরম খাদ্যসংকটে

সোমালিয়ায় জাতিসংঘের ত্রাণসহায়তা শিবির থেকে পানি নিয়ে ফিরছেন দুই নারী
এএফপি ফাইল ছবি

আফ্রিকার দেশ কেনিয়া, সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার কিছু এলাকার ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চরম ক্ষুধার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এসব তথ্য জানায়।

ডব্লিউএফপি জানায়, ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ হিসেবে পরিচিত এ অঞ্চলে পরপর তিনটি বর্ষা মৌসুম অনাবৃষ্টিতে গেছে। এর ফলে এখানে ১৯৮১ সালের পর থেকে সবচেয়ে শুষ্ক অবস্থা বিরাজ করছে।

চরম এই খরার ফলে ফসল বিনাশ ও ‘অস্বাভাবিকভাবে’ বহু গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। এতে পশুপালন ও কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল গ্রামীণ পরিবারগুলো তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

ডব্লিউএফপির পূর্ব আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড বলেছেন, এমনিতেই পানির সরবরাহ ও চারণভূমির সংকট চলছে। তার মধ্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সামনের মাসগুলোতে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম দেখাচ্ছে। এতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এক বিবৃতিতে ডানফোর্ড বলেন, ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, গবাদিপশু মারা যাচ্ছে। পরপর তিন মৌসুমের খরায় ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ হিসেবে পরিচিত এই অঞ্চলে খাদ্যসংকট বেড়েই চলছে। সোমালিয়ার মতো বড় ধরনের অঘটনের পুনরাবৃত্তি এড়াতে এখনই মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। ২০১১ সালে সোমালিয়ায় দীর্ঘ খরায় সৃষ্ট খাদ্যাভাবে আড়াই লাখ মানুষ প্রাণ হারান।

কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার সংশ্লিষ্ট এলাকায় ইতিমধ্যে খাদ্যসহায়তা শুরু হয়েছে। এসব স্থানে এমনিতেই অপুষ্টির হার বেশি। বলা হচ্ছে, চলমান পরিস্থিতিতে সেখানে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই মারাত্মক ক্ষুধার ঝুঁকিতে রয়েছে।

এর মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব ইথিওপিয়ায় প্রায় ৫৭ লাখ মানুষের খাদ্যসহায়তা প্রয়োজন, যার মধ্যে ৫ লাখ অপুষ্টিতে ভোগা মা ও শিশু। মে মাসের মধ্যে জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সোমালিয়ায় গুরুতরভাবে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ৩৫ লাখ থেকে ৪৬ লাখ পর্যন্ত উন্নীত হতে পারে। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর কেনিয়ায় ২৮ লাখ মানুষের খাদ্যসহায়তা প্রয়োজন। সেখানে খরার কারণে গত সেপ্টেম্বরে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। ডব্লিউএফপি বলেছে, এ অঞ্চলে আগামী ছয় মাস ত্রাণ ও অন্যান্য তৎপরতা চালাতে ৩২ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের প্রয়োজন।