আলজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্টের ‘গোপন কন্যার’ বিচার শুরু

আলজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকা
ছবি: রয়টার্স

উত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকার (৮৩) বিয়ের কথা কখনো শোনা যায়নি। কিন্তু তাঁর ‘গোপন মেয়ে’ বলে পরিচয় দিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে নাছিনাছি জৌলিখা-চফিকা নামের একজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে আলজেরিয়াতে অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিচার শুরু হয়েছে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চফিকাকে বহু বছর ধরে বুতেফ্লিকার গোপন কন্যা বলে অনেকেই মনে করেছেন।

নাছিনাছি জৌলিখা-চফিকা মূলত ‘মেমি মায়া’ নামে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কন্যা পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন চুক্তি থেকে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আবদেল আজিজ গত বছর ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছিলেন।

চফিকাকে বিভিন্ন গভর্নর, মন্ত্রী ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারাও নানাভাবে সাহায্য করেছেন। চফিকাকে সাহায্য করায় তাঁদের কয়েকজনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে এবং বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোতে বলা হচ্ছে, চফিকার বাবা ছিলেন বুতেফ্লিকার বন্ধু। এই সুযোগ কাজে লাগান চফিকা। বুতেফ্লিকা নির্বাচনে জেতার পরপরই তাঁর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন চফিকা। প্রেসিডেন্টের কাছে থিম পার্ক তৈরির অনুমতি পেতে সাহায্য চান। কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি অনেক চুক্তি করে ফেলেন।

এর মধ্যে ওরান শহরের গভর্নরকে তিনি নতুন একটি সুপার মার্কেট তৈরির জন্য সাহায্যের কথা বললে তা শীর্ষ পর্যায়ের কানে পৌঁছায়। বুতেফ্লিকার ভাই সাঈদের পক্ষ থেকে চফিকার সঙ্গে প্রেসিডেন্টের কোনো সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়।

২০১৯ সালে আটক হন চফিকা। তদন্তকারীরা তাঁর অত্যন্ত সুরক্ষিত একটি বাড়ির দেয়ালের মধ্যে ১০ লাখ আলজেরিয়ান মুদ্রা, ২ লাখ ৭০ হাজার ইউরো, ৩০ হাজার ডলার ও ১৭ কেজি গয়না উদ্ধার করে।

চফিকা তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এসব সাঈদের পরিকল্পিত। তিনি তাঁর ভাই বুতেফ্লিকার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি দেখতে পারতেন না।

গত বছরের এপ্রিল মাসে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বুতেফ্লিকা এখন আলজেরিয়ার উত্তরে তাঁর বোন ফাতমা-জোহরার কাছে রয়েছেন।

গত বছর তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ জনতা দেশটির রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন দাবি করেন। আবদেল আজিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ‘লা পোভার’ নামক একটি সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করেছেন। আবদেল আজিজ ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ইসলামি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এক গৃহযুদ্ধে প্রায় দেড় লাখ মানুষ নিহত হয়। এর মাধ্যমে দেশটিতে ক্ষমতা পোক্ত হয় তাঁর।