ইথিওপিয়া নিয়ে আলোচনায় বসছে জাতিসংঘ

ইথিওপিয়ায় কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ে কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে
ছবি : রয়টার্স

আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার তাইগ্রে সমস্যা নিয়ে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলের ওই রাজ্যের চলমান সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইথিওপিয়ার তাইগ্রে অঞ্চলের প্রধান রাজনৈতিক দল তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছে।

তাইগ্রের রাজধানী মেকেলেতে সরকারি বাহিনী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে—এমন ঘোষণার পরপরই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ভার্চ্যুয়াল এ বৈঠকের ডাক দেয়।

ইথিওপিয়ার সরকার লড়াইরত তাইগ্রের সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য কাল বুধবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে।

টিপিএলএফের সেনারা দাবি করছেন, তাঁরা ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ বিভাগ গুঁড়িয়ে দিয়েছেন।

প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চলা ও লড়াইয়ে কয়েক শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ওই অঞ্চল যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হওয়ায় উভয় পক্ষের দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, এই সংঘাত মারাত্মক উত্তেজনার দ্বারপ্রান্তে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহের এ লড়াই কয়েক শ লোক মারা গেছে এবং হাজারো মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ইথিওপিয়ায় চরম মানবিক সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।

ইথিওপিয়া সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আত্মসমর্পণ না করলে কোনো দয়া দেখানো হবে না।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবি আহমেদ ক্ষমতায় আসার পর আফ্রিকার এই দেশে রাজনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন শুরু করেন। প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দুই দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে তাঁরই হাত ধরে। ফলে, ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছরের মাথায় নোবেল শান্তি পুরস্কার পান আবি।

প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় আবি আহমেদ প্রশংসিত হলেও নিজ দেশের উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চল তাইগ্রেতে শান্তি ফেরাতে তেমন পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ। উল্টো ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারের নামে তাইগ্রের অধিবাসীদের কোণঠাসা করে ফেলেন বলে অভিযোগ ওঠে আবির বিরুদ্ধে।

এ ঘটনা ইথিওপিয়ার রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বজায় রাখা টিপিএলএফ পার্টির সঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধ উসকে দেয়। শুরু হয় টিপিএলএফের বাহিনীর সঙ্গে ইথিওপিয়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘাত।