ইথিওপিয়ায় কয়েক শ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে: অ্যামনেস্টি

ইথিওপিয়ার তাইগ্রে অঞ্চলে ফেডারেল সরকার ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। এতে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) অনুগত সেনাদের গত সোমবারের এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করছেন। কিন্তু তাইগ্রের কর্মকর্তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করছেন।

গত সপ্তাহে সরকারি বাহিনী ও টিপিএলএফের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

বিবিসি জানিয়েছে, ওই অঞ্চলে ফোন লাইন ও ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে বলে সেখান থেকে তথ্য পাওয়া কঠিন।

ইথিওপিয়ার সরকার ও টিপিএলএফের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। দেশটির উত্তরাঞ্চলের তাইগ্রে শহরের নিয়ন্ত্রণ করে টিপিএলএফ। সেখানে সামরিক অভিযানের পাশাপাশি বিমান হামলাও চালিয়েছে ইথিওপিয়ার সরকার।

ফলে তাইগ্রের কয়েক হাজার বাসিন্দা সীমান্ত অতিক্রম করে সুদানে শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নিচ্ছেন। সুদান বলছে, তাইগ্রে থেকে পালিয়ে আসা লোকজনকে তারা শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় দেবে।

অ্যামনেস্টি বলছে, তারা নিশ্চিত হয়েছে যে কয়েক শ লোককে ছুরিকাঘাত করে ৯ নভেম্বর রাতে মেরে ফেলা হয়েছে। তারা তাইগ্রের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের মে কাদেরা শহরের কয়েক শ মানুষের হত্যার ছবি ও ভিডিও পরীক্ষা করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, আটটি বিভিন্ন এলাকায় তাইগ্রেরিয়ান সেনা ও ফেডারেল সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে। এ লড়াইয়ে ৯০ লাখ মানুষের স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাইগ্রে অঞ্চলে যোগাযোগের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে সাহায্য পৌঁছানো যাচ্ছে না।

ইথিওপিয়ায় পার্লামেন্টের এক জরুরি সভা শেষে ৮ নভেম্বর সেনাপ্রধান, গোয়েন্দাপ্রধান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পার্লামেন্টে জরুরি সভায় তাইগ্রে সরকার ভেঙে দেওয়ার পক্ষে ভোট পড়ে। বলা হচ্ছে, তাইগ্রে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে এবং সাংবিধানিক পদ্ধতিকে সংকটে ফেলেছে।

তাইগ্রের নেতা ডেব্রেটসিয়ন জেরবাইমাইকেল এর আগে আবির প্রশাসনের বিরুদ্ধে ওই রাজ্যে আক্রমণ করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিলেন। তিনি আফ্রিকান ইউনিয়নকে হস্তক্ষেপ করে গৃহযুদ্ধ ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফেডারেল সরকার যতক্ষণ না পর্যন্ত আলোচনায় সম্মত না হবে, ততক্ষণ তাইগ্রে প্রতিরক্ষা চালিয়ে যাবে।

গত বুধবার ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ দেশটির তাইগ্রে অঞ্চলের সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর বিমান হামলা চালানোর কথা বলেন।