ঐতিহ্যবাহী লালিবেলার পুনর্দখল নিয়েছে ইথিওপিয়ার বিদ্রোহীরা

লালিবেলা শহরে মধ্যযুগীয় ১১টি পাথরের গির্জা রয়েছে
রয়টার্স ফাইল ছবি

তাইগ্রের বিদ্রোহীরা ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর লালিবেলার পুনর্দখল নিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে। ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনী ও মিত্ররা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মাথায় এর পুনর্দখল নিল বিদ্রোহীরা।

২০২০ সালের নভেম্বরে ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনী ও তাইগ্রে বাহিনীর মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। এ বছরের জুনের শেষে তাইগ্রে অঞ্চলের বড় একটি অংশ দখলে নেয় তাইগ্রে বাহিনী। সেখান থেকে ইথিওপিয়ার সেনাদের প্রত্যাহার করা হয়। কয়েক মাস ধরে লড়াই বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি তাইগ্রে বাহিনীর বিরুদ্ধে আবারও অভিযান শুরু করে ইথিওপিয়ার সরকার।

আজ সোমবার বিকেলে আল-জাজিরাকে টেলিফোনে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, তাইগ্রের যোদ্ধারা শহরের কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। সেখানে কোনো লড়াই চলছে না। আরেক বাসিন্দা বলেন, তারা (তাইগ্রে বিদ্রোহীরা) ফেরত এসেছে। ইতিমধ্যে এখানে পৌঁছে গেছে। তিনি আরও বলেন, তারা সম্ভবত পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা থেকে এসেছে।

ওই বাসিন্দার ভাষ্য অনুযায়ী, এলাকার বেশির ভাগ মানুষ আতঙ্কিত বোধ করছে, কেউ কেউ পালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় পালিয়েছে। কারণ, এলাকাটি সরকারি বাহিনীর দখলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজনের অনেকে উল্লাস প্রকাশ করেছিলেন।

ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় নাম রয়েছে লালিবেলা শহরের। এখানে মধ্যযুগীয় ১১টি পাথরের গির্জা রয়েছে। ইথিওপিয়ান অর্থোডক্স চার্চের পুণ্যার্থীদের জন্যও এটি একটি পবিত্র স্থান।

তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ) একটি বিবৃতি দিয়েছে। টিপিএলএফ-সংশ্লিষ্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, গাশেনা ও লালিবেলাকে সংযোগকারী সড়কসহ অসংখ্য এলাকায় পাল্টা অভিযান শুরু করেছে তারা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, টিপিএলএফ সদস্যরা প্রথমে আত্মরক্ষা করেছে এবং পরে সরকারি ও মিত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান চালিয়েছে। গাশেনা ও আশপাশের এলাকায় বিজয় অর্জনের জন্য হামলা করা হচ্ছে।

আল-জাজিরা বলছে, শহর পুনর্দখল হওয়ার ব্যাপারে ইথিওপিয়া সরকারের মুখপাত্র লেগেসে তুলুর মন্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তিনি তাতে সাড়া দেননি। একইভাবে টিপিএলএফের মুখপাত্র গেতাচিউ রেদার প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেছে আল-জাজিরা।

এক প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আমহারা অঞ্চলের বিশেষ বাহিনী ও তাদের মিত্র বাহিনী শনিবার রাতে লালিবেলা ছাড়তে শুরু করে। এ দুই বাহিনীই ইথিওপিয়া সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

সামরিক সূত্রের বরাতে আল-জাজিরা বলেছে, সরকারপন্থী বাহিনীগুলো ওয়ালদিয়া শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ওয়ালদিয়া হলো টিপিএলএফের শক্ত ঘাঁটি। আগস্টের শুরুর দিকে টিপিএলএফ-সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলো শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। তবে ১ ডিসেম্বর ইথিওপিয়ার সেনা ও তাদের আমহারা অঞ্চলের মিত্ররা শহরটি পুনর্দখলে নেয়।