কেপটাউনে ছড়িয়ে পড়ছে দাবানল

দাবানলের ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে কেপটাউনের আকাশ
ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ আফ্রিকায় কেপটাউনে দাবানলের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। শহরের উপকণ্ঠে ১৭ তলাবিশিষ্ট তিনটি আবাসিক ভবন থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ঐতিহাসিক ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দাবানলের আগুন নেভাতে কাজ করছেন ২৫০ জন অগ্নিনির্বাপককর্মী। চারটি হেলিকপ্টার করে পানি ঢালা হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় গত রোববার শহরটির বিখ্যাত মাউন্টেন টেবিল থেকে এ দাবানলের উৎপত্তি হয়। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী ইউনিভার্সিটি অব কেপটাউনে দাবানলের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক কয়েকটি ভবন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শত শত শিক্ষার্থীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দাবানলের আগুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ বছরের পুরোনো গ্রন্থাগারের রিডিং রুম ধ্বংস হয়ে গেছে। পুড়ে গেছে আফ্রিকার বইপত্রের সংগ্রহ ও আর্কাইভস, যেগুলোর এখনো পাঠোদ্ধারই হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের নির্বাহী পরিচালক উজালা সাতগুর বলেন, ‘অসহায়ত্ব নিয়ে আমাদের কয়েকজন দাবানলের আগুনে ঐতিহাসিক গ্রন্থাগার ও মূল্যবান সংগ্রহ পুড়তে দেখল।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, সাড়ে তিন হাজারের মতো ঐতিহাসিক সংগ্রহ হারিয়ে গেছে, যার মধ্যে ছিল আফ্রিকার জাতিগোষ্ঠীর ভাষা নিয়ে নানা সংগ্রহও। হারিয়ে গেলেও অন্তত আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে এসব সংগ্রাহকের অনেক কিছুই। এ ছাড়া অগ্নিনিরোধক দরজা থাকায় বেসমেন্টে থাকা আগুন থেকে রেহাই পেয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথিপত্র।

দাবানলের আগুনে ধ্বংস হয়ে গেছে ঐতিহাসিক মোস্টার্ট মিল। ১৭৯৬ সালে এটি নির্মিত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় এটিই ছিল সবচেয়ে পুরোনো উইন্ডমিল। ধোঁয়া ও বাতাসে ছাই ছড়িয়ে পড়েছে অনেক এলাকায়। বাসিন্দাদের দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।

দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল পার্কস কর্তৃপক্ষ জানায়, কম আর্দ্রতা ও শুকনা ঝোপঝাড়ের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, শুষ্ক বাতাস থেকে এ দাবানলের উৎপত্তি। অগ্নিনির্বাপকের কর্মীরা মনে করছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

কেপটাউনে সমুদ্রতীরবর্তী টেবিল মাউন্টেন হলো দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম প্রসিদ্ধ স্থান। প্রতিবছর দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক এখানে ভিড় করে।