জাতিসংঘের ১৬ কর্মীকে আটকে রেখেছে ইথিওপিয়া

ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার একটি এলাকা
রয়টার্স ফাইল ছবি

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় তাদের বেশ কয়েকজন স্থানীয় কর্মীকে আটক করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ছয় কর্মী ইতিমধ্যে মুক্তি পেলেও ১৬ কর্মী এখনো আটক। তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি নিশ্চিত করতে ইথিওপিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘ। গতকাল মঙ্গলবার নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এসব কথা জানান।

এক বছর ধরে তাইগ্রের উত্তরাঞ্চলে বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে ইথিওপিয়া সরকারের লড়াই চলছে। টিপিএলএফ সেনাশিবিরগুলোতে হামলা করেছে দাবি করে গত বছরের নভেম্বরে তাইগ্রেতে অতিরিক্ত সেনা পাঠায় ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ।

টিপিএলএফ অবশ্য দাবি করছে, আবি আহমেদের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিবেশী মিত্রদেশ ইরিত্রিয়ার সেনাদের নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সমন্বিত হামলা চালাচ্ছে। যুদ্ধের পুরো সময় ধরেই ইথিওপিয়া সরকার ও জাতিসংঘের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।

অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগে গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাত জ্যেষ্ঠ কর্মীকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় ইথিওপিয়া। গত সপ্তাহে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। আর এরপরই জাতিসংঘের বিভিন্ন স্থানীয় কর্মীকে আটকের খবর এল।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, জাতিসংঘের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আটক কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁরা সবাই ইথিওপিয়ার নাগরিক এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার হয়ে কাজ করেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, কেন এ কর্মীদের আটক করা হয়েছে, তা এখন পর্যন্ত আমাদের জানানো হয়নি।’
ইথিওপিয়া সরকার এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানান, ইথিওপিয়ায় জাতিসংঘের কর্মীদের আটক রাখার খবরে ওয়াশিংটন ‘উদ্বিগ্ন’। গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ইথিওপিয়া থেকে এর আগে জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের বহিষ্কারের ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানিয়েছিলাম আমরা। তেমনি জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে জাতিসংঘ কর্মীদের আটক রাখার খবর যদি নিশ্চিত হয়ে থাকে, তবে আমরা একইরকম নিন্দা জানাব।’

‘বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে আমরা যতটুকু জেনেছি, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা তাইগ্রেয়ান। ইথিওপিয়ার সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে মানুষের ওপর যে হয়রানি চালাচ্ছে ও আটক করছে, তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’ বলেন নেড প্রাইস। তিনি আরও জানান, তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) যোদ্ধাদের চালানো প্রতিশোধমূলক হামলার ব্যাপারেও একইভাবে নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, তাইগ্রেয়ান ও ওরোমো যোদ্ধারা আদ্দিস আবাবার দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে দাবি করার পরপরই গত সপ্তাহে ছয় মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ইথিওপিয়া সরকার। আল–জাজিরার প্রতিনিধি জানান, আদ্দিস আবাবায় নিরাপত্তা অভিযান চালিয়ে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁরা জাতিসংঘের স্থানীয় কর্মী। ইথিওপিয়ার মন্ত্রিসভা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পরপরই এ অভিযান চালানো হয়। তিনি বলেন, ‘রাজধানীজুড়ে অনেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে অভিযানের আওতায় জাতিসংঘের কর্মীরাও গ্রেপ্তার হন।’