পরিবেশ আইন ভেঙে গ্রেপ্তার পরিবেশমন্ত্রী

বরখাস্ত পরিবেশমন্ত্রী মুস্তফা আরুই
ছবি: এএফপি

ইতালি থেকে গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলার শত শত কনটেইনার আমদানি করাসংক্রান্ত এক কেলেঙ্কারির জের ধরে তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ দেশটির পরিবেশমন্ত্রীসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। খবর এএফপির।

চলতি গ্রীষ্মে তিউনিসিয়ার কাস্টমস কর্মকর্তারা ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী বন্দরনগরী সস থেকে ২৮২টি কনটেইনার জব্দ করে। কর্মকর্তারা জানান, শিল্পকারখানায় রিসাইক্লিংয়ের (পুনর্ব্যবহার) কাজে ব্যবহারের উপযোগী উপকরণের নাম করে এসব কনটেইনারে গৃহস্থালির ক্ষতিকর প্লাস্টিকসামগ্রী আনা হচ্ছিল। পরে তিউনিসিয়ার পরিবেশ আইনে এগুলো জব্দ করা হয়।

বর্জ্যসামগ্রী নিয়ে নোংরা বৈশ্বিক বাণিজ্যের বিষয়টিই এ ঘটনায় আবার সামনে এল। ধনী দেশগুলোর ক্ষতিকর বর্জ্য গরিব দেশগুলোয় পাঠানো রোধে কঠোর আইনকানুন থাকার মধ্যেই এই বাণিজ্য বেড়ে চলেছে।

তিউনিসিয়ার প্রতিষ্ঠান সোরপ্ল্যাস্ট দুটি চালানে এসব কনটেইনার আমদানি করে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, সরকারের অনুমতিক্রমেই কারখানায় পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার উপযোগী প্লাস্টিকসামগ্রীতে ভর্তি কনটেইনার আমদানি করেছিল তারা।

গত আগস্টে ইন্টারপোল এক সতর্কবাণীতে উল্লেখ করেছিল, বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত সংগঠনগুলো সারা বিশ্বে, বিশেষ করে এশিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া অবৈধ বর্জ্য–বাণিজ্য থেকে বিপুল পরিমাণ লাভবান হচ্ছে।

কেলেঙ্কারির জের ধরে প্রধানমন্ত্রী হিচেম মেচিচি পরিবেশমন্ত্রী মুস্তফা আরুইকে গত রোববার রাতে বরখাস্ত করেছেন। এরপর থেকে তাঁকেসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তাও রয়েছেন। সসের আদালতের মুখপাত্র জেবুর ঘিমি এ কথা জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তার অন্যদের মধ্যে তিউনিসিয়ার ন্যাশনাল ওয়েইস্ট রিসাইক্লিং এজেন্সি, কাস্টমস সার্ভিস ও ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির কয়েকজন কর্মী আছেন। আরও আছেন বেসরকারি একটি ল্যাবরেটরির একজন মালিক ও নেপলসে তিউনিসিয়ার নিযুক্ত একজন কূটনীতিক। পলাতক রয়েছেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সোরপ্লাস্টের মালিক।

মুখপাত্র জেবুর ঘিমি জানান, ওই ঘটনায় ভুয়া নথি ব্যবহার ও নিষিদ্ধ ক্ষতিকর সামগ্রী আমদানিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

গত আগস্টে ইন্টারপোল এক সতর্কবাণীতে উল্লেখ করেছিল, বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত সংগঠনগুলো সারা বিশ্বে, বিশেষ করে এশিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া অবৈধ বর্জ্য–বাণিজ্য থেকে বিপুল পরিমাণ লাভবান হচ্ছে।

বর্জ্যসামগ্রী নিয়ে নোংরা বৈশ্বিক বাণিজ্যের বিষয়টিই এ ঘটনায় আবার সামনে এল। ধনী দেশগুলোর ক্ষতিকর বর্জ্য গরিব দেশগুলোয় পাঠানো রোধে কঠোর আইনকানুন থাকার মধ্যেই এই বাণিজ্য বেড়ে চলেছে।

এসব বর্জ্যের গন্তব্য হচ্ছে মূলত দরিদ্র দেশগুলো, যাদের এগুলো ব্যবস্থাপনা করার মতো যথেষ্ট সক্ষমতা নেই। বর্জ্যগুলো পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের পরিবর্তে যখন পোড়ানো হয় বা গর্তে ফেলা হয়, তখন পরিবেশের জন্য তা ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে।

গত ৮ জুলাই তিউনিসিয়ার কর্মকর্তারা কনটেইনারগুলো জব্দ করে সেগুলো ইতালিতে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কাস্টমস কর্মকর্তা জানান। কিন্তু সেগুলো এখনো দেশটিতে রয়ে গেছে।