বিক্ষোভে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার নাইজেরিয়ার সেনাপ্রধানের

নাইজেরিয়ায় বিক্ষোভে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে
ছবি : রয়টার্স

গত অক্টোবর মাসে নাইজেরিয়ার লাগোসে বিক্ষোভরত নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী। দেশটির সেনাপ্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তাইয়ো বলেছেন, সেনারা ফাঁকা গুলি ছুড়েছিল। তিনি তদন্তকারীদের সামনে তাঁর দাবির পক্ষে প্রমাণ হিসেবে ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শন করেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, লাগোসের ধনী এলাকা লেক্কিতে পুলিশের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় সেনাবাহিনী গুলি চালায়। তাতে ১২ জন নিহত হন।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, তাঁরা সেনাসদস্যদের মানুষের ওপর গুলি চালাতে দেখেছেন।

গত ২০ অক্টোবর লেক্কি টোলগেট এলাকায় হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। পরে সেনাবাহিনীকে ওই বিক্ষোভকারীদের ঘিরে ফেলতে দেখা যায় এবং তারপর গুলি চালানো হয়।

ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা হাত বেঁধে বসে জাতীয় সংগীত গাইছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, নাইজেরিয়ার পুলিশের বিশেষ ইউনিট স্পেশাল অ্যান্টি-রোবারি স্কোয়াডের (সার্সের) বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ দানা বাঁধে। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে লোকজনকে অবৈধভাবে আটক, হয়রানি করা, এমনকি গুলি করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এটি বিলুপ্ত করার দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। এ অবস্থায় ১১ অক্টোবর এই বাহিনী বিলুপ্তও করে সরকার। তবে বিক্ষোভকারীরা নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীতে আরও পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশটির শাসনব্যবস্থায়ও সংস্কার আনার দাবি তোলেন।

বিক্ষোভ দমাতে লাগোস এবং আরও কয়েকটি অঞ্চলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ২৪ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়। কারফিউ উপেক্ষা করে গতকাল লাগোসের লেক্কি টোলপ্লাজা এলাকায় জড়ো হন একদল বিক্ষোভকারী। ওই স্থানে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।

দেশটির প্রেসিডেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশি বর্বরতার দাবি তদন্ত করতে দেশজুড়ে বিচারিক প্যানেল স্থাপন করা হবে।

সেনাপ্রধান বিচারিক প্যানেলের সামনে বলেন, তাঁর সেনাদের নিয়ে প্রচুর ভুয়া তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। তাঁদের একমাত্র অপরাধ হচ্ছে সবাইকে রক্ষা করার জন্য দায়বদ্ধতা বিষয়টি। গতকাল তিনি বিচারিক প্যানেলের সামনে হাজির হন। তিনি ভিডিও দেখিয়ে বলেন, সেনারা ফাঁকা গুলি করেছে।
নাইজেরিয়ার সরকার বলছে, বিক্ষোভের ওই ঘটনায় ৩০ জন আহত ও একজন মারা গেছেন। তবে তিনি সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা যাননি।