অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন: যুদ্ধের সেই হাতিয়ার ব্যবহার হয়েছে তাইগ্রেতেও

প্রতীকী ছবি

যুদ্ধে জয়ের জন্য নানান পদ্ধতি ও হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়। নৃশংস হত্যাযজ্ঞে অস্ত্রের ব্যবহারের পাশাপাশি ধর্ষণ একটি হাতিয়ার। বিপক্ষের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষের নারীদের সম্ভ্রম কেড়ে নেওয়া এবং নারী ও নাবালিকাদের যৌনদাসী করা নতুন কিছু নয়। নাৎসিদের অত্যাচারের ইতিহাস, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বা সাম্প্রতিক ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বর্বরতা সবারই জানা। এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকল গৃহযুদ্ধে জর্জরিত ইথিওপিয়াও। বিভিন্ন প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, দেশটিতে নির্বিচারে দলবদ্ধ ধর্ষণ হয়েছে। আর এ অমানবিক কাজ করেছেন টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) বিদ্রোহীরা।

ইথিওপিয়ার গৃহযুদ্ধ নিয়ে গতকাল বুধবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি প্রতিবেদনে বলেছে, গত বছর ইথিওপিয়ার আমহারা প্রদেশের দুটি শহরে নির্বিচারে দলবদ্ধ ধর্ষণ চালিয়েছে তাইগ্রের বিদ্রোহীরা।

অ্যামনেস্টি বলছে, বিদ্রোহীরা কোবো শহরে নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে। চেনা গ্রামে অন্তত ৩০ নারী ও মেয়েশিশুকে যৌন নিপীড়ন করেছেন বিদ্রোহীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং চিকিৎসা সরঞ্জামসহ সরকারি সম্পত্তিও হয় লুট করেছেন, না হলে ভাংচুর করেছেন।

এসব অভিযোগের কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি টিপিএলএফ। তবে এর আগেও এমন অভিযোগ তাঁরা অস্বীকার করেছেন। ইথিওপিয়ার সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধেও হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।

নির্যাতত ওই ৩০ নারী ও মেয়েশিশুর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে অ্যামনেস্টির পক্ষ থেকে। তাঁদের বয়ানে উঠে এসেছে ভয়াবহ অত্যাচারের বিবরণ। তাঁরা জানিয়েছেন, তাইগ্রে বিদ্রোহীরা তাঁদের দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অনেকেরই শরীরে গুরুতর আঘাত ছিল।

১৪ বছরের এক নির্যাতিতা জানায়, তাকে ও তার মাকে একই সঙ্গে ধর্ষণ করে তাইগ্রের যোদ্ধারা। তারপর থেকেই আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

২০২০ সালের নভেম্বরে তাইগ্রেতে ইথিওপিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে আকস্মিক হামলা হয়। তারপর দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এই প্রদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে আইনের শাসন ফেরাতে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী আবে আহমেদ। এ কারণে সেখানে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে মেকেল দখল করে রাজধানী আদ্দিস আবাবার দিকে এগোতে থাকে বিদ্রোহীরা। এ নিয়ে সরকার ও বিদ্রোহী পক্ষের অনেকেরই প্রাণ গেছে। তবে সম্প্রতি দুই পক্ষই আলোচনার পর শান্তির পথে হেঁটে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তথ্যসূত্র: বিবিসি