হীরার হুজুগে গ্রামজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি

হীরার খোঁজে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি।
ছবি: সংগৃহীত

সম্পদের জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। তবে এ জন্য হাজারখানেক মানুষ মিলে একটা গ্রাম পুরো খুঁড়ে একাকার করে দেওয়ার ঘটনা সম্ভবত এবারই প্রথম ঘটল। কেউ হয়তো যুক্তি দেখাতে পারেন, কৃষিকাজের জন্য জমিতে তো খোঁড়াখুঁড়ি, লাঙল দেওয়াই হয়। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার ওই গ্রামের খোঁড়াখুঁড়ির সঙ্গে কৃষিকাজের কোনো যোগসূত্র নেই। অজ্ঞাত এক পাথরের কারণে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে ওই গ্রামের মানুষ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ঘটনাটি দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু–নাটাল প্রদেশের কোয়াহ্লাথি গ্রামের। গত শনিবার থেকে ওই গ্রামে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে স্থানীয় লোকজন। দেশের অন্যান্য এলাকা থেকেও অনেকে ছুটে গেছে সেখানে। গত সোমবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত খোঁড়াখুঁড়ি চলছিল।

ঘটনার শুরু এক পশুপালকের একটি পাথর খুঁজে পাওয়ার মধ্য দিয়ে। পশু চরাতে গিয়ে একটি খোলা মাঠে মাটি খুঁড়ে তিনি ওই পাথর পান। পাথরটি আসলে কী, তা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে স্থানীয় লোকজন এটাকে হীরা বলে ধরে নিয়েছে। এরপর খবর ছড়িয়ে পড়ে, কোয়াহ্লাথি গ্রামে মাটির নিচে হিরা রয়েছে। আর তারপরই দলে দলে মানুষ ওই গ্রামে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে।

২৭ বছর বয়সী স্থানীয় এক তরুণ বলেন, খোঁড়াখুঁড়ি করে তিনি বেশ কয়েকটি পাথর পেয়েছেন, যদিও সেগুলো আকারে ছোট। তিনি বলেন, ‘পাথরগুলো আমাদের জীবন বদলে দেবে। কারণ, আমি যে কাজ করি, তা সম্মানজনক নয়। পাথরগুলো নিয়ে যখন বাড়ি ফিরলাম, সবাই আনন্দে নেচে উঠেছিল।’

এদিকে গ্রামজুড়ে ওই খোঁড়াখুঁড়ির খবর সরকারের কাছেও চলে গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার খনিজ সম্পদ দপ্তর সোমবার বলেছে, তারা ওই গ্রামে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে। এই দল নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে জানাবে, পাথরগুলো আসলে কী।

তবে খনিজ সম্পদ দপ্তরের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বসে নেই স্থানীয় লোকজন। তারা এরই মধ্যে পাথরগুলো আকারভেদে ১০০ র‍্যান্ড (৭ দশমিক ২৯ মার্কিন ডলার) থেকে ৩০০ র‍্যান্ড দরে বিক্রি শুরু করে দিয়েছে।

এদিকে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ অনুসন্ধানের সুযোগ দিতে খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করে সবাইকে সরে যেতে বলেছে প্রাদেশিক সরকার। সরকারের আশঙ্কা, এভাবে হাজারো মানুষ একসঙ্গে জড়ো হওয়ার কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে কর্তৃপক্ষের কোনো কথাই কানে তুলছে না কেউ।