৯০ কোটি ডলার না দিলে জাহাজটি ছাড়বে না মিসর

সুয়েজ খালে কনটেইনারবাহী বিশাল জাহাজ আটকে পড়ায় বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয় মিসরের। ছবি: রয়টার্স

সুয়েজ খালে আটকে পড়া পানামার পতাকাবাহী জাহাজটিকে জব্দ করেছে মিসর। গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ আটকে দেশটিকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে জাহাজের মালিকপক্ষকে ৯০ কোটি ডলার জরিমানা করেছেন মিসরের একটি আদালত। এ অর্থ পরিশোধ পরিশোধ না করলে দুই লাখ টন ওজনের জাহাজটি ফিরিয়ে দেওয়া হবে না। গতকাল বুধবার সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর দিয়েছে।

গত মাসে প্রায় আড়াআড়িভাবে আটকে পড়েছিল ‘এভার গিভেন’ নামের জাহাজটি। এতে সুয়েজ খালে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সুয়েজ খালের দুই প্রবেশমুখে জাহাজজট সৃষ্টি হয়। সমন্বিত নানা কৌশলের মাধ্যমে টানা প্রায় এক সপ্তাহ প্রচেষ্টার পর কনটেইনারবাহী জাহাজটি সরানো সম্ভব হয়। এর ফলে আবার চালু হয় সুয়েজ খাল।

নৌ পরিবহন চলাচলের ডেটা কোম্পানি লয়েড লিস্ট জানায়, চারটি ফুটবল মাঠ থেকেও লম্বা জাহাজটি এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ নৌপথটি আটকে দিয়েছিল। এর কারণে প্রতিদিন মিসর ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারিয়েছে বলে খাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।

সরকারি সংবাদপত্র আল-আহরামকে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের (এসসিএ) প্রধান ওসামা রাবি বলেন, ‘৯০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এমভি এভার গিভেন জব্দ করা হয়েছে।’ ইসমাইলিয়া ইকোনমিক কোর্টে রাবি জানান, নোঙর করা অবস্থায় এবং চলাচলের সময় জাহাজটির রক্ষণাবেক্ষণের খরচের ভিত্তিতে এ ক্ষতিপূরণ হিসাব করা হয়েছে।

ক্ষতিপূরণের এ অঙ্ক কীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে জাহাজটির মালিক জাপানি প্রতিষ্ঠান শোয়েই কিসেন কাইশাকে বিশদভাবে কিছু জানাননি ওসামা রাবি। তবে এসসিএর একটি সূত্র গতকাল মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মালিক প্রতিষ্ঠান, ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠান ও খাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে।

২০১৮ সালে তৈরি পানামার পতাকাবাহী জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার। প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টন ওজনের জাহাজটি ২০ হাজার কনটেইনার ধারণ করতে সক্ষম। জাহাজটি প্রায় ১৮ হাজার ৩০০ কনটেইনার বহন করছিল। জাপানি প্রতিষ্ঠানের মালিকানার জাহাজটি তাইওয়ানের এভারগ্রিন মেরিন করপোরেশন লিজ নিয়ে পরিচালনা করছে।

গত ২৯ মার্চ মুক্ত হওয়ার পর এভার গিভেন এখন সুয়েজ খালের গ্রেট বিটার লেকে নোঙর করা আছে। জাহাজটির কারণে খালের উত্তর ও দক্ষিণ প্রবেশমুখে সাময়িক বন্ধ থাকায় ৪২০টি জাহাজের জট তৈরি হয়। এপ্রিলের প্রথম দিকে এ জাহাজজট ছাড়ে।