চার্লসের অভিষেককে ঘিরে বিক্ষোভের প্রস্তুতি, আটক ৬

রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক ঘিরে রাজতন্ত্রবিরোধীরা লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ার ও শোভাযাত্রার পথের পাশে বিক্ষোভের ডাক দেন
ছবি: এএফপি

রাজা তৃতীয় চার্লসের শোভাযাত্রার পথে বিক্ষোভের প্রস্তুতিকালে রাজতন্ত্রবিরোধী গ্রুপ রিপাবলিকের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিন্দা কুড়িয়েছে যুক্তরাজ্যের পুলিশ।

রিপাবলিক জানিয়েছে, রাজার অভিষেকের কয়েক ঘণ্টা আগে লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা ওই ছয় বিক্ষোভকারীকে আটক করেন। এ ছাড়া তাঁদের কয়েক শ প্ল্যাকার্ড কেড়ে নেন।

রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক ঘিরে রাজতন্ত্রবিরোধীরা লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ার ও শোভাযাত্রার পথের পাশে বিক্ষোভের ডাক দেন। বিক্ষোভ ঘিরে নতুন আইন সত্ত্বেও আজ বিক্ষোভ প্রদর্শনের বিষয়ে তাঁরা অনড় ছিলেন।

রিপাবলিক গ্রুপের দাবি, পুলিশ যাঁদের গ্রেপ্তার করেছে, তাঁদের মধ্যে রিপাবলিকের প্রধান নির্বাহী গ্রাহাম স্মিথও রয়েছেন। তাঁরা রাজার যাত্রাপথে ‘নট মাই কিং’ লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। ওই সময় অনেকেই গ্রাহামকে ছেড়ে দিতে বলেন। আবার অনেকেই ‘গড সেভ দ্য কিং’ বলে যুক্তরাজ্যের পতাকা নাড়েন।

লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে রিপাবলিকানের এক বিক্ষোভকারী বলেন, গ্রেপ্তারের কারণ সম্পর্কে পুলিশ কিছু জানায়নি। তাদের কোথায় নেওয়া হচ্ছে সে তথ্যও দিচ্ছে না।

চার্লসের অভিষেক ঘিরে রাজতন্ত্রবিরোধীরা শোভাযাত্রার পথের পাশে বিক্ষোভের ডাক দেন। অনেকে হাতে ছিল ‘আমার রাজা নয়’ লেখা প্ল্যাকার্ড
ছবি: এএফপি

এদিকে বিক্ষোভকারীদের এভাবে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তাৎক্ষণিক সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে একে উদ্বেগজনক হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউর যুক্তরাজ্য শাখার পরিচালক ইয়াসমিন আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেন, এ ধরনের ঘটনা আপনি মস্কোয় আশা করতে পারেন, লন্ডনে নয়। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় রাখে। যুক্তরাজ্য সরকার তা ক্রমশ ভুলে যাচ্ছে।

যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি নতুন আইন হয়েছে। এতে দেশটির পুলিশ বাহিনীকে প্রতিবাদবিরোধী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এর কয়েক দিন পরেই বিক্ষোভের দায়ে গ্রেপ্তারের এ ঘটনা ঘটল।

গ্রেপ্তারের ঘটনার বিষয়ে টুইটারে রিপাবলিকানের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, এটাই কি গণতন্ত্র?

গত সপ্তাহে স্মিথ বলেছিলেন, রাজার শোভাযাত্রা ঘিরে বিরক্ত করার কোনো উদ্দেশ্য নেই তাঁদের। প্ল্যাকার্ড নেড়ে এবং চিৎকার করে গণমাধ্যমের সামনে তাঁরা দেখাতে চান, শুধু রাজ অনুগতরাই দেশে বাস করেন না। তাঁদের বিরোধিতাকারীও আছেন।

জীবাশ্ম জ্বালানির বিরোধিতাকারী গোষ্ঠীগুলো বেশ কিছুদিন ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ করছে। তাদের ঠেকানোর কৌশল হিসেবে নতুন পুলিশ ক্ষমতা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে বিক্ষোভকারীদের কঠোর শাস্তির কথাও বলা আছে। গতকাল শনিবার পৃথকভাবে ঘটনায় ‘জাস্ট স্টপ অয়েল’ গ্রুপের বিক্ষোভকারীদের ১৯ সদস্যকে সেন্ট্রাল লন্ডনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।