কান্দাহার বিমানবন্দরে রকেট হামলা, সব ফ্লাইট বাতিল

কান্দাহার বিমানবন্দরের প্রবেশ পথে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত কান্দাহার বিমানবন্দরে অন্তত তিনটি রকেট আঘাত হেনেছে। গতকাল শনিবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। দেশটির এক কর্মকর্তা আজ রোববার সকালে বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানান।

বিমানবন্দরটির প্রধান মাসুদ পশতুন বলেন, গত রাতে বিমানবন্দর লক্ষ্য করে তিনটি রকেট ছোড়া হয়। এর মধ্যে দুটি রকেট বিমানবন্দরের রানওয়েতে এসে পড়েছে। এ কারণে এই বিমানবন্দর থেকে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত রানওয়ে মেরামতের কাজ চলছে বলে জানান কান্দাহার বিমানবন্দরের প্রধান। আজ দিনের শেষ ভাগে বিমানবন্দরের কার্যক্রম আবার শুরু হতে পারে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ কান্দাহার বিমানবন্দরে রকেট হামলা হওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

কান্দাহারসহ আফগানিস্তানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে তালেবান হামলা চালিয়েছে বলে আজ বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়। বাকি দুটি শহর হলো হেরাত ও লস্করগাহ। এই শহরগুলো ঘিরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের লড়াই জোরদার হচ্ছে। আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে এই তিন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নিতে চায় তালেবান।

কান্দাহারের এক সাংসদ বলেছেন, তালেবানের হাতে শহরটি পতন হওয়ার গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে। শহরের হাজারো অধিবাসী ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শহরে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, কান্দাহার প্রদেশের রাজধানী কান্দাহার তালেবানের দখলে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কান্দাহার আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। কান্দাহারে বিমানঘাঁটি রয়েছে। তালেবানের হাত থেকে কান্দাহার রক্ষায় এই বিমানঘাঁটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। কেননা এই বিমানঘাঁটির মাধ্যমেই তালেবানবিরোধী লড়াইয়ে সরকারি বাহিনী নানা সাহায্য-সহযোগিতা পেয়ে থাকে।

দুই প্রাদেশিক রাজধানী হেরাত ও লস্করগাহ দখলের জন্যও অগ্রসর হচ্ছে তালেবান। এই শহর দুটির অবস্থাও নাজুক।

বিবিসি বলছে, দেশটির সরকারি বাহিনী তিন শহরের নিয়ন্ত্রণ কতটা সময় ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ আছে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ আফগানিস্তান থেকে প্রায় সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ঘোষণা আসার পরই তালেবান হামলা ও বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অভিযান জোরদার করে। ইতিমধ্যে তারা বিশেষ করে আফগানিস্তানের গ্রামীণ এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে তালেবান এখন পর্যন্ত কোনো প্রাদেশিক রাজধানী দখল করতে পারেনি। কিন্তু এখন তারা সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে।

আফগানিস্তানে পশ্চিমা-সমর্থিত গনি সরকারকে উৎখাত করে ইসলামি আইন চালু করতে চায় তালেবান। তালেবানের দাবি, তারা ৮৫ শতাংশ এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এ ছাড়া তারা পাকিস্তান ও ইরানের সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংও নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

আরও পড়ুন