‘খরচ বেশি, তাই নিউজিল্যান্ড ছেড়েছি’

নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটন
ফাইল ছবি: রয়টার্স

খাদ্য ও জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ফসল উৎপাদন কমে গেছে সারা বিশ্বে। করোনা মহামারির কারণে খাদ্য ও শ্রমিকের ঘাটতিও দেখা দিয়েছে।

বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হতে পারে। কারণ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। বেড়েছে সারের দামও।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সংকটে পড়েছে উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত নিউজিল্যান্ডও। জীবযাত্রার খরচ বহন করতে না পারায় অনেকেই নিউজিল্যান্ড ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছেন অন্য দেশে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটন বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরগুলোর অন্যতম একটি। সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে যারা থাকেন তাঁদের পরিস্থিতি বেশ গুরুতর। গত বছর শহরটিতে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ১২ শতাংশ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, পেট্রল ও খাবারের বাড়তি দাম।

জীবনযাত্রার খরচ সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন শহরের বাসিন্দারা। টিকতে না পেরে অনেকেই জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমাচ্ছেন পার্শ্ববর্তী দেশ অস্ট্রেলিয়ায়।

নিউজিল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসাদের একজন ক্রিস। একটি আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। স্ত্রী হারমনি ও চার শিশু কন্যাসহ সম্প্রতি ওয়েলিংটন ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন শহরে। সেখানে নিজেদের শহর ছেড়ে নতুন জীবন শুরু করেছেন। ক্রিস জানান, চার সন্তানের খরচ সামলানো সেখানে ব্যয়বহুল ছিল।

সপরিবারে দেশ ছেড়ে যাওয়াটা ক্রিসের স্ত্রী হারমনির জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। তিনি বলেন, দেশ ছেড়ে যাওয়াটা তাঁর সন্তানদের জন্য খুব প্রয়োজন ছিল।

হারমনি বলেন, ‘আপনি নিউজিল্যান্ডে বসবাস করতে পারবেন না। সেখানে বেঁচে থাকা যায় না। আপনি ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়বেন। বেঁচে থাকতে হলে হয় নিউজিল্যান্ডের পরিবর্তন দরকার বা আপনি নিজেই সেখান থেকে চলে যাবেন। আমি সন্তানদের ভালো ভবিষ্যৎ চাই। কিন্তু সেটা নিউজিল্যান্ডে সম্ভব নয়।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সামাল দিতে বেশ কিছু স্বল্প মেয়াদি পদক্ষেপ নিয়েছে নিউজিল্যান্ডের সরকার। এর মধ্যে রয়েছে জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেওয়া এবং গণপরিবহনের খরচ কমানো। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারের এমন পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়।