চীনে অস্বাভাবিক বন্যা, সরানো হলো লাখো মানুষকে

চীনের গুয়াংডং এলাকায় তীব্র বন্যা দেখা দিয়েছে
ছবি: রয়টার্স

চীনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি প্রদেশে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। টানা বর্ষণে সৃষ্ট এ বন্যায় কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিবিসির খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার দুটি প্রদেশে বন্যাসতর্কতার মাত্রা বাড়ানো হয়। সেখানকার বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিছু এলাকায় বন্যার পানির উচ্চতা ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের ভিডিওতে বন্যায় সড়কে থাকা গাড়ি ভেসে যেতে ও দড়ির সাহায্যে লোকজনকে উদ্ধারের দৃশ্য দেখা গেছে।

আবহাওয়া কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯৬১ সালের পর ওই অঞ্চলে এবার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। নদীতীরবর্তী ও নিচু এলাকাগুলোর বাসিন্দাদেরকে তুলনামূলক উঁচু জায়গায় সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে গুয়াংডং প্রদেশের শাওগুয়ান। সেখানকার কর্মকর্তারা বন্যাসতর্কতার মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছেন।

শহরটিতে গত মে মাসের শেষ দিক থেকে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গুয়াংডংয়ের কুইংগুয়ান শহরেও সর্বোচ্চ বন্যাসতর্কতা জারি করা হয়েছে।

গুয়াংডং ও গুয়াংসি প্রদেশকে ঘিরে রাখা পার্ল নদীর নিচু অববাহিকায় বন্যার কারণে পণ্য সরবরাহ ও উৎপাদন কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। চীনের সিনহুয়া নিউজের তথ্য অনুযায়ী, চীনের উত্তর–পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসি প্রদেশে বন্যায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার কর্তৃপক্ষ বন্যাসতর্কতার মাত্রা বাড়িয়েছে। বন্যার কারণে ওই অঞ্চলের ৪৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। সেখানকার অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ সাত কোটি ডলারের বেশি।

সামনের দিনগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে এবং পার্ল নদীর অববাহিকায় পানির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় কর্মকর্তাদের।

চীনের আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, গুয়াংডং, ফুজিয়ান ও গুয়াংসিতে মে মাসের শুরু থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাত পৌঁছেছে ৬২১ মিলিমিটারে। এটি ১৯৬১ সালের পর থেকে সেখানকার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

গ্রীষ্মকালে প্রবল বর্ষণের কারণে চীনের দক্ষিণাঞ্চলে নিয়মিতই বন্যা দেখা যায়। তবে জলবায়ু পরিবর্তন এ পরিস্থিতির জটিলতা আরও বাড়িয়ে তুলছে বলে উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ।
এর বিপরীতে চীনের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি প্রদেশে অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন