অস্ত্র হাতে তালেবান সদস্যরা
ফাইল ছবি: এএফপি

২০ বছর পর আবার আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। যুদ্ধে জেতা যতটা তাদের জন্য সহজ হয়েছে, শান্তি রক্ষা এবং দ্বিধাবিভক্ত ও সংঘর্ষে জর্জিরত দেশটি শাসন করা তাদের ততটাই কঠিন হবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল–জাজিরা বলছে, দেশটির শাসনক্ষমতা হাতে তুলে নেওয়ার প্রাক্কালে ছয়টি বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে তালেবান।

গ্রহণযোগ্যতা: প্রথম চ্যালেঞ্জটিই হচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্যতার। আশরাফ গনির সরকার জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছিল। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। সরকার দুর্নীতিতে আচ্ছন্ন ছিল। অনিশ্চিত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অনেকেই দেশ ছেড়েছিলেন। পুনর্বাসন ঘটেছিল কুখ্যাত মিলিশিয়া নেতাদের।

জনশক্তি: তালেবান ইতিমধ্যে ব্যাপক সামরিক শক্তি অর্জন করেছে। এই শক্তির ব্যবস্থাপনা তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে তারা অধিকাংশ প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নিয়ে নেয়। তবে তালেবান যেভাবে জেলাগুলো সহজে দখল করেছে, তা ধরে রাখার জন্য আরও ব্যাপক ক্ষমতার প্রয়োজন হবে।

শাসন: তালেবান যুদ্ধে ভালো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে তারা এই বৈচিত্র্যময় দেশকে প্রায় নগণ্য আধুনিক অবকাঠামো দিয়ে পরিচালনা করবে? যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিশেষজ্ঞ জোনাথন শ্রোডেন বলেন, তালেবান এখনো কার্যকরভাবে শাসন করার ক্ষমতা দেখাতে পারেনি।

সেনা নিয়ন্ত্রণ: বিদেশি দখলদারির বিরুদ্ধে লড়তে এক হয়েছে তালেবান। কিন্তু এখন যোদ্ধারা যখন গভর্নর বা মেয়র হবেন এবং তাঁদের হাতে আয় ও ক্ষমতা আসবে, তখন তাঁরা আগের সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন কি না, সে প্রশ্ন থাকবে।

তালেবানের অতীত: ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে তালেবান সংখ্যালঘু ও নারীদের ওপর অত্যাচার করেছে। তারা আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে হামলা চালায়। তালেবান এখন মানবাধিকার নিয়ে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।

অর্থনীতি ও বিদেশি সাহায্য: বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি আফগানিস্তান। এর ২০ শতাংশের বেশি আয় আসে বিদেশি সাহায্য থেকে। তালেবান আফগান দখল করায় ৯৫০ কোটি মার্কিন ডলারের আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অনেক পশ্চিমা দাতাও মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। এটাও তালেবানের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।