তালেবানের পুনরুত্থানে বাইডেনের সামনে চার চ্যালেঞ্জ

আফগানিস্তানের রাজপথে গাড়ি হাঁকিয়ে ছুটছেন তালেবান যোদ্ধারা। রোববার লাগমান প্রদেশেছবি: এএফপি

ওয়াশিংটনে তখন জর্জ ডব্লিউ বুশের শাসন। তাঁর হাত ধরেই ঠিক দুই দশক আগে আফগানিস্তানে লড়াই শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। উদ্দেশ্য টুইন টাওয়ারে হামলার প্রতিশোধ নেওয়া। প্রতিপক্ষ আল কায়েদা ও তালেবান। ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই’ নামে চালানো এ যুদ্ধে প্রাণ গেছে হাজারো সামরিক-বেসামরিক মানুষের। কাবুলে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল তখনকার তালেবান সরকার। খরচ হয়েছে হাজার কোটি ডলার।
দুই দশকের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে আফগানদের ওপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে। ওয়াশিংটনের মসনদে বদলেছে মুখ। বুশ গিয়ে বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়ে ক্ষমতা এখন জো বাইডেনের হাতে। প্রেসিডেন্ট বদলে গেলেও ২০ বছরের আফগান কাঁটা যেন কিছুতেই গলা থেকে নামাতে পারছিল না ওয়াশিংটন।

আফগানিস্তানের যুদ্ধের ব্যয়ভার টানা ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। তাই তো আফগানিস্তান থেকে সম্মান নিয়ে ফিরে আসার উপায় খুঁজছিল দেশটি। এ জন্য এক সময়ের শত্রু তালেবানের সঙ্গে কাতারের রাজধানী দোহায় আলোচনা চালিয়েছেন ট্রাম্প। চুক্তিও করেছেন। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার দায়িত্ব এসে পড়েছে বাইডেনের কাঁধে। আলোচনা ও চুক্তি আগে হলেও তিনিই জানান, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

বাইডেন প্রশাসনের আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেনা প্রত্যাহার হলেও আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই থাকবে আশরাফ গনি সরকারের হাতে। যেহেতু গনি যুক্তরাষ্ট্রের হাতের পুতুল, তাই পরোক্ষভাবে কলকাঠি বাইডেনের কবজায় থাকবে। তালেবান হয়তো প্রতিরোধ গড়বে, কিন্তু মার্কিন অর্থে প্রশিক্ষিত ও অস্ত্রে সজ্জিত আফগান বাহিনী তা ঠেকিয়ে দেবে। এ যেন সাপও মরল আর লাঠিও ভাঙল না, এমন একটি পরিস্থিতি স্বপ্ন দেখছিলেন বাইডেন।

কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন কথা বলছে। স্বপ্ন পূরণ হয়নি বাইডেন কিংবা গনি কারোই। গত কয়েক দিনের আফগান পরিস্থিতিতে রীতিমতো তোপের মুখে পড়েছেন বাইডেন। আর টাকাপয়সা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন গনি। কারণটা সবার জানা। তালেবানের হাতে পতন ঘটেছে কাবুলের। ২০ বছরের ব্যবধানে এখন আফগান প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে তালেবানের পতাকা পতপত করে উড়ছে। দেশটিতে নতুন তালেবান সরকার গঠন এখন সময়ের ব্যাপারমাত্র। কাবুল শহর এখন আতঙ্কের নগরী। কাবুলের বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় দেশ ছাড়ার জন্য আফগানদের ভিড় জমেছে।

এখন প্রশ্ন হলো, এত অল্প সময়ে কীভাবে তালেবান পুরো আফগানিস্তান দখলে নিল? তা–ও বিনা বাধায়? যেখানে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটির নিরাপত্তার ভার ছিল সরকারি বাহিনীর হাতে। সেখানে এ বাহিনী তালেবানের পুনরুত্থানের মুখে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারল না! অন্যদিকে তালেবানকে হটিয়ে নিজেদের পছন্দের সরকার কাবুলে বসিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, সেই তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের ভার ছেড়ে মুখ গুটিয়ে ফিরে আসছে বাইডেন প্রশাসন। অনেকটা যেন গত শতকের সত্তরের দশকে ভিয়েতনাম থেকে পালিয়ে আসার মতো অবস্থা।

এ পরিস্থিতিতে আরও প্রশ্ন উঠেছে, দুই দশকের আফগান যুদ্ধে এত খরচ, এত প্রাণহানি—এসবের মূল্য কী দাঁড়াল? রক্তক্ষয়ী আফগান যুদ্ধ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্জনই–বা কী?
যা–ই হোক, নতুন তালেবান সরকারের আমলে আফগানিস্তান ও বেসামরিক আফগানদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্জন নিয়ে চলবে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে বর্তমান পরিস্থিতি আশু সামাল দিতে আপাতত জো বাইডেন প্রশাসনকে মোটাদাগে অন্তত চারটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নিরাপদে ফিরিয়ে আনা

কাবুলের দখল তালেবানের হাতে যাওয়ার আগে-পরে খালি করা হয়েছে দেশটির মার্কিন দূতাবাস। আপাতত কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দূতাবাসের কাজ চলছে। আর বিমানবন্দরটির নিরাপত্তা দিচ্ছেন মার্কিন সেনারা। আফগানিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিক ও তাঁদের আফগান মিত্ররা সেখানেই আছেন। আরও আছেন বিভিন্ন দেশের নাগরিক, কূটনীতিক ও উন্নয়নকর্মীরা। রয়েছেন পশ্চিমাদের আফগান মিত্ররাও। যাঁরা বিগত দুই দশকে দেশটিতে মার্কিন ও পশ্চিমা বাহিনী, উন্নয়ন সংস্থার হয়ে কাজ করেছেন। তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা এখন বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

আফগানিস্তানে সরকার গড়তে চলেছে তালেবান। তাঁরা চাইবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নতুন সরকারকে দ্রুত স্বীকৃতি দিক। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শর্তযুক্ত স্বীকৃতি হলেও তা হবে তালেবানের জন্য বড় একটি অর্জন। দুই দশকের যুদ্ধে তাঁদের জয়। মার্কিনদের নৈতিক পরাজয়।

গত জুলাইয়ে বাইডেন প্রশাসন আফগান মিত্রদের জন্য একটি বিশেষ ভিসার ঘোষণা দিয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত আফগান নাগরিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এ ভিসার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে আনা হবে। লক্ষ্য ছিল ২ হাজার ৫০০ আফগানকে আশ্রয় দেবে ওয়াশিংটন। কিন্তু আবেদন পরে অনেক বেশি। এখনো প্রায় ২০ হাজার আবেদন প্রক্রিয়াধীন। এর মধ্যেই কাবুলের আকস্মিক পতন ঘটেছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এখনকার ভীতিকর পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক আফগানরা কাবুলের বিমানবন্দরে ভিড় জমিয়েছেন। উড়োজাহাজ দেখলে তাতে উঠার জন্য হামলে পড়ছেন। চাকায় কিংবা ডানায় বসে হলেও কাবুল ছাড়তে চান তাঁরা। এভাবে প্রাণহানির খবরও মিলেছে।

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে নিজ নাগরিক, দূতাবাসকর্মী ও মিত্রদের ফিরিয়ে আনতে চার্টার্ড উড়োজাহাজ কাবুলে পাঠিয়েছে। তবে এতে বিমানবন্দরে অবস্থান করা সব আফগানের জায়গা হবে কি না, সেটা অনিশ্চিত। এমনকি কিছু আফগানকে সাময়িকভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। গণমাধ্যমের খবর, বাংলাদেশ সরকার এ প্রস্তাব নাকচ করেছে।
বাইডেন প্রশাসন নিজ নাগরিক ও মিত্র আফগানদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রমকে আপাতত সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। কাবুলের পতনের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া টেলিভিশন ভাষণেও বাইডেন দেশে ফেরানোর এ প্রক্রিয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ প্রক্রিয়ায় তালেবান বাধা দিলে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করা হবে।

তালেবান যোদ্ধারা কাবুল দখলের পর লোকজন ভয়ে দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের কেউ কেউ উড়োজাহাজের ককপিটেও চড়ে বসেছে। সোমবার আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরে
ছবি: এএফপি।

তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি

যে তালেবানের হাত থেকে কাবুল কেড়ে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, দুই দশক পর দেশটিতে সেই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিস্থিতির মুখে পড়েছে মার্কিন প্রশাসন। এ ছাড়া আর কোনো উপায় আপাতত নেই। তাই তো মার্কিন কর্তাদের মুখে এখন সমঝোতার কথা শোনা যাচ্ছে। রোববার এক সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘ভবিষ্যৎ আফগান সরকার তার জনগণের মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখলে ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় না দিলে তার সঙ্গে আমরা কাজ করতে পারি এবং সরকারকে স্বীকৃতি দিতে পারি।’ অর্থাৎ, শর্ত সাপেক্ষে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে রাজি বাইডেন প্রশাসন। আর এ জন্য তালেবানকে আফগান নারী ও কিশোরীদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। দেশটিতে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া যাবে না।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসন তালেবানের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসেছে। চুক্তি করেছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির কোনো বিষয় সেখানে ছিল না। এখন পাশার দান উল্টে গেছে। আশরাফ গনির পলায়নে আফগানিস্তানে সরকার গড়তে চলেছে তালেবান। অস্ত্রের জোরে সরকার গড়লেও তাঁরা চাইবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নতুন সরকারকে দ্রুত স্বীকৃতি দিক। নৈতিক ভিত্তি পাক তালেবান সরকার। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শর্তযুক্ত স্বীকৃতি হলেও তা হবে তালেবানের জন্য বড় একটি অর্জন। দুই দশকের যুদ্ধে তাদের জয়। মার্কিনদের নৈতিক পরাজয়। এখন দেখার বিষয়, বাইডেন প্রশাসন কোন কৌশলে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে।

মার্কিনরা এমন একটি যুদ্ধে অকাতরে প্রাণ দিতে পারে না, যেখানে আফগানরাই নিজেদের রক্ষায় লড়াইয়ে নামতে ইচ্ছুক নয়।
জো বাইডেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন

গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসেন বাইডেন। একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ রাজনীতিবিদের পরিচয় নিয়েই তাঁর ক্ষমতায় আসা। ওই সময় বাইডেন বলেছিলেন, বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্র আবার ফিরে এসেছে। বাইডেনের ওই ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র আবার বিশ্বদরবারে মর্যাদা ও শক্তিমত্তার সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, এমন প্রত্যাশা জাগে সর্বত্র। কিন্তু তালেবানের হাতে আফগান সরকারের পতন বাইডেনের দক্ষ রাজনীতিকের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন জাতীয় স্বার্থ নিয়েও। কেননা, মার্কিন প্রশাসন বরাবর বলে এসেছে, তালেবানের কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন সেই ‘সন্ত্রাসীদের’ হাতে কাবুলের শাসনভার। এতে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা হবে কীভাবে? বিশেষত চীন ও রাশিয়া পেছন থেকে তালেবান সরকারকে সমর্থন জুগিয়ে গেলে বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে, এটাই স্বাভাবিক।

আরও পড়ুন

তবে কি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল? জো বাইডেন বলছেন ভিন্ন কথা। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ওয়াশিংটনের জন্য সঠিক হয়েছে। দেশটিতে মার্কিন সেনা উপস্থিতি ধরে রাখার মধ্যে আর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ জড়িত নয়।

আকাশে উড়ছে সিএইচ-৪৬ সি নাইট সামরিক হেলিকপ্টার। এ হেলিকপ্টারে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মার্কিন দূতাবাসকর্মী ও বিদেশি নাগরিকদের। রোববার কাবুলে
ছবি: এএফপি

তাহলে এত দ্রুত কাবুলের পতনের পেছনের কারণ কী? আফগানদের কাঁধে বন্দুক রেখে বাইডেনের সোজাসাপ্টা অবস্থান, আফগানরাই নিজেদের রক্ষার জন্য লড়েনি। আশরাফ গনি নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন, আফগান সেনারা তালেবানের বিরুদ্ধে লড়বে। কিন্তু এ অনুমান ভুল ছিল। মার্কিনরা এমন একটি যুদ্ধে অকাতরে প্রাণ দিতে পারে না, যেখানে আফগানরাই নিজেদের রক্ষার লড়াইয়ে নামতে ইচ্ছুক নয়।

গোয়েন্দা ব্যর্থতার অভিযোগ সামলানো

অনেকেই বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা ব্যবস্থা বিশ্বসেরা। তবে কি দেশটির বাঘা বাঘা গোয়েন্দারা আফগান পরিস্থিতি নিয়ে ব্যর্থ হলেন? তালেবানের পুনরুত্থানের সম্ভাবনা তাঁরা আঁচ করতে পারেননি? এমন প্রশ্ন নানা মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। গত জুনে মার্কিন গোয়েন্দাদের বরাতে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে শক্তি অর্জন করছে তালেবান, এমন তথ্য মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে দেশটিতে পুরোপুরি ক্ষমতা অর্জন করতে তালেবানের ছয় মাস সময় লাগতে পারে। তত দিনে মার্কিন সেনারা দেশে ফিরে আসবে।

আফগানিস্তানে তালেবান যা ঘটিয়েছে, সেটা আমাদের আশঙ্কার চেয়েও দ্রুত ঘটেছে।
অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কিন্তু চলতি মাসের শুরুর দিক থেকে তালেবানের নজরকাড়া উত্থান ঘটে। একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নিয়ে আশরাফ গনি সরকারের কাঁধে নিশ্বাস ফেলে তারা। এ পরিস্থিতিতে ১০ আগস্ট মার্কিন গোয়েন্দারা বলেন, তালেবানের কাবুল দখল করতে আরও অন্তত তিন মাস লাগবে। ওয়াশিংটন পোস্ট এ তথ্য প্রকাশ করে।

বাকি ঘটনা সবারই জানা। এর মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় কাবুলে তালেবানের পতাকা উড়তে দেখা যায়, যা শুধু আশরাফ গনি সরকার নয়, বাইডেন প্রশাসনের কাছেও ছিল অপ্রত্যাশিত। ব্লিঙ্কেন স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন, আফগানিস্তানে তালেবান যা ঘটিয়েছে, সেটা আশঙ্কার চেয়েও দ্রুত ঘটেছে।

ফলে বাইডেন সরকারের সক্ষমতা ও গোয়েন্দাদের ভূমিকা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা, যা কথিত বিশ্ব মোড়লের ভাবমূর্তিতে আঘাত হেনেছে। হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের অধ্যাপক স্টিফেন ওয়াল্টের মতে, পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতার ওপর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তালেবান। এটা সামাল দেওয়া এখন বাইডেনের সামনে বড় একটি চ্যালেঞ্জ।

আরও পড়ুন