দেশকে করোনামুক্ত ঘোষণা দেওয়া মন্ত্রী এখন নিজেই আক্রান্ত

নেপালের পর্যটনমন্ত্রী জোগেশ ভট্টরাই (বাঁয়ে) শুক্রবার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিনয় মোহন কাটরার (ডানে) সঙ্গে বৈঠক করেন
ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

নেপাল করোনামুক্ত—বড় গলায় এ কথা বলেছিলেন দেশটির পর্যটনমন্ত্রী। মূলত পর্যটকদের আকৃষ্ট করতেই তাঁর ওই ঘোষণা ছিল। এখন নিজেই করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়েছেন তিনি। দেশটির মন্ত্রিসভার প্রথম সদস্য হিসেবে তাঁর করোনা শনাক্ত হলো। কাঠমান্ডু পোস্ট রোববার এ খবর দিয়েছে।

ওই মন্ত্রীর নাম জোগেশ ভট্টরাই। তিনি গত বছরের জুলাইয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির মন্ত্রিসভায় পর্যটনমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ভট্টরাই নিজেই দিয়েছেন খবরটা। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘গত সোমবারও পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ হয়েছিলাম। এরপর আমি কাঠমাণ্ডুর বাইরে কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। শনিবারের পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হয়েছি।’

মন্ত্রী ভট্টরাই গত বৃহস্পতিবারও মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নেন। ফলে অন্য মন্ত্রীরাও এখন সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন। অবশ্য, মন্ত্রিসভার একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীসহ প্রত্যেকেই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বসেন। মাস্ক পরেছিলেন সবাই।

নেপালে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের খবর আসে গত জানুয়ারিতে। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটিকে করোনামুক্ত হিসেবে বর্ণনা করেন পর্যটনমন্ত্রী ভট্টরাই। একই সঙ্গে তিনি নেপালে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

এর আগে মন্ত্রিসভার কারও সংক্রমিত হওয়ার খবর না এলেও প্রধানমন্ত্রী ওলির আশপাশের অন্তত আটজন করোনা ‘পজিটিভ’ হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং ফটোগ্রাফারও।

সামগ্রিকভাবে, নেপালে করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। গত শুক্রবারের দাপ্তরিক হিসাব বলছে, দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে। দিন হিসেবে সর্বোচ্চ সংক্রমণের খবরটা এসেছে গত শনিবার। এদিন ৫ হাজার ৮ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দেয় দেশটি। করোনায় মৃত্যুর মোট সংখ্যা অবশ্য এখন পর্যন্ত ৬১৪।

নেপালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যোগেশ্বর গৌতম মানছেন, দেশটি কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে। শনিবার তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন সময় এসে গেছে। সংক্রমিত রোগীতে হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টারগুলো প্রায় ভরে গেছে। রোগী শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। কমছে সুস্থ হওয়ার হার।..আমার ধারণা, আমরা আরও কঠিন পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি।’