দ্বিরাষ্ট্রিক সমাধানের বিবেচনা আপাতত নেই: ইসরায়েল

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিড।
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সংঘাত নিরসনে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য তাগাদা দিয়ে থাকে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলো। তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিড বলেছেন, ফিলিস্তিনকে ঘিরে সংকট নিরসনে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পরিকল্পনা আপাতত নেই।

গত সোমবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ফরেন অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিলের বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লাপিড এমন মন্তব্য করেন। ওই বৈঠকে ইইউভুক্ত ২৬ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেতজ–এর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ইয়ার লাপিড বলেন, ‘এটা সবাই জানেন, আমি দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান সমর্থন করি। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এ জন্য কোনো পরিকল্পনা আপাতত আমাদের হাতে নেই। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে সেটিকে অবশ্যই শান্তিপ্রিয় ও গণতান্ত্রিক হতে হবে। আমরা কোনোভাবেই ইসরায়েলিদের জীবনের জন্য নতুন করে কোনো হুমকি তৈরির অংশ হতে পারি না।’

ইসরায়েল আরব বিশ্বে নতুন ধরনের শান্তি প্রতক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে বলে এ সময় মন্তব্য করেন লাপিড। তিনি বলেন, সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে দূতাবাস খুলেছে ইসরায়েল। শিগগিরই মরক্কো, বাহরাইন ও সুদানে দূতাবাস খোলার আশা করা হচ্ছে। এ সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ‘ফিলিস্তিনিদের জীবনমান উন্নয়নে মানবিক সহায়তা প্রদানসহ সম্ভাব্য যা করার, আমরা করব।’

ইইউ–ইসরায়েলের সম্পর্কের বিষয়ে জোটের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে এই বৈঠক ইসরায়েলের সঙ্গে ইইউর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নেওয়ার বড় একটি সুযোগ।

একই দিনে লাপিড ব্রাসেলসে সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টেলটেনবার্গের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি ন্যাটোর সঙ্গে মহযোগিতার সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহের কথা জানান। বিশেষত গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড, সাইবার প্রযুক্তি ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে সহযোগিতা বাড়াতে জোর দেন তিনি। আর ইইউর সঙ্গে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারে ইসরায়েলের আগ্রহের কথা জানান লাপিড।

ইসরায়েল–তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ

টেলিফোনে কথা বলেছেন ইসরায়েলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জগ ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এএফপি জানিয়েছে, সোমবার হার্জগকে ফোন করেন এরদোয়ান।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলা ও আগ্রাসনের কড়া সমালোচনা করেন এরদোয়ান। তাই হার্জগকে এরদোয়ানের ফোন করার ঘটনা গণমাধ্যমের নজর কেড়েছে। চলতি সপ্তাহে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গেও কথা বলেছেন এরদোয়ান। আব্বাসকে তিনি বলেছিলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনে তাঁর দেশ নীরব থাকবে না।

এদিকে ফোনালাপে ইসরায়েলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে এরদোয়ান জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনে সংকটের স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘের পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই রাষ্ট্রভিত্তিক প্রক্রিয়া সমর্থন করে তুরস্কসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তুরস্ক ও ইসরায়েলের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্ব রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি জ্বালানি, পর্যটন ও প্রযুক্তি খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সম্ভাব্য সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর জোর দেন।