মর্গে নেওয়ার পর জানা গেল তিনি জীবিত

প্রতীকী ছবি

চীনের সাংহাইতে একটি প্রবীণ সুরক্ষা কেন্দ্রে বসবাসকারী বয়োজ্যেষ্ঠ এক ব্যক্তিকে মৃত ভেবে মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে মর্গে নেওয়ার পর দেখা যায়, তিনি আসলে জীবিত। ইতিমধ্যে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে লকডাউনে থাকা সাংহাইয়ের মানুষের মধ্যে এ ঘটনা বাড়তি বেদনা যোগ করেছে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।

চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, গত রোববার দুই ব্যক্তি (মর্গের কর্মী বলে ধারণা করা হচ্ছে) লাশবাহী হলুদ রঙের একটি ব্যাগ নিয়ে পুতুয়ো জেলার সাংহাই সিনচাংঝেং ওয়েলফেয়ার হাসপাতালের সামনে যান।

ওই দুই ব্যক্তির গায়ে করোনা প্রতিরোধী সুরক্ষা পোশাক। ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, হাসপাতালের এক কর্মীর সামনে ব্যাগের জিপার খুলতে শুরু করেন ওই দুই ব্যক্তি। তাঁরা দাবি করছিলেন, মৃত ভেবে যাঁকে ব্যাগে ভরা হয়েছে, সেই ব্যক্তি আসলে এখনো জীবিত।

তাঁদের দাবি অনুসারে হাসপাতালকর্মীরা এরপর ওই ব্যক্তি আসলে বেঁচে আছেন কি না, তা পরীক্ষা করতে থাকেন। এরপর তাঁরা আবার ব্যাগের মুখ বন্ধ করে ফেলেন। আশপাশের পথচারীরা এ নিয়ে প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলতে থাকেন, ব্যাগের ভেতর ওই রোগী বেঁচে থাকলেও ব্যাগের মুখ আটকে দেওয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

ভিডিওর পরবর্তী অংশে দেখা গেছে, ওই হাসপাতালকর্মী ভেতরে চলে গেছেন। এরপর তিনি দুটি সাদা সুরক্ষা পোশাক নিয়ে বাইরে বের হয়ে আসেন এবং মর্গ থেকে আসা ওই দুই কর্মীকে পরতে দেন। এরপর ওই রোগীকে হুইলচেয়ারে করে হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

২ কোটি ৬০ লাখ মানুষের শহর সাংহাইয়ে সম্প্রতি নতুন করে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থতার জন্য সাংহাইয়ের স্থানীয় সরকার তুমুল সমালোচনার মধ্যে রয়েছে। গত ২৮ মার্চ থেকে চলমান লকডাউন এখনো শিথিল না করায় সাংহাইয়ের বাসিন্দাদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। এর মধ্যেই রোগীকে ভুল করে মৃত ভাবার এ ঘটনা তাঁদের আরও আতঙ্কিত করে তুলেছে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। পুতুয়োর সিভিল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর সাজা নিশ্চিত করারও অঙ্গীকার করেছে ব্যুরো।

প্রবীণ সুরক্ষা কেন্দ্রটি ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে শতাধিক বয়স্ক ব্যক্তিকে সেবা প্রদানের সক্ষমতা রয়েছে।