মানচিত্র এবার জাতিসংঘ ও গুগলকে পাঠাচ্ছে নেপাল

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। ছবি: সংগৃহীত
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও নেপালের মধ্যকার সম্পর্কে তিক্ততা দিনকে দিন বাড়ছে। সেই তিক্ততা সহজে মিটছে না। কারণ কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরাকে নিজেদের দাবি করে যে মানচিত্র প্রকাশ করেছিল নেপাল, সেটির ইংরেজি সংস্করণ জাতিসংঘ ও গুগলের কাছে পাঠাচ্ছে দেশটি।

নেপালের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ভারতের ‘ইন্ডিয়া টুডে’র খবরে এসব কথা বলা হয়েছে।

নেপালের সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, ইংরেজিতে নতুন মানচিত্র ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে নেপাল। ওই মানচিত্র পাঠানো হচ্ছে জাতিসংঘ ও গুগলের কাছে। ইন্টারনেটে ও বিশ্ব মানচিত্রে নেপালের ওই মানচিত্র সবাই যেন হাতে পান, সে জন্যই এ উদ্যোগ নিয়েছে নেপাল। গতকাল শনিবার এ কথা জানান নেপালের ভূমি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক মন্ত্রী পদ্মা আরিয়াল।

মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে নেপালের সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, শিগগিরই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নেপালের সংশোধিত এই মানচিত্র পাঠানো হবে। ওই মানচিত্রে কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধুরা নেপালের অন্তর্গত রয়েছে। তিনি আরও জানান, দ্রুতই একটি বইও নাকি প্রকাশ করবে নেপাল। সেখানেও এই তিনটি অংশকে নেপালের অংশ হিসেবেই দেখানো হয়েছে।

ইতিমধ্যেই ওই সংশোধিত মানচিত্রের ২৫ হাজার কপি ছাপানো হয়েছে। দেশের স্থানীয় ইউনিট, প্রাদেশিক বিভিন্ন সংস্থা ও অন্যান্য দপ্তরে পাঠানো হয়েছে সেই মানচিত্রের কপি। কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা—এই তিনটি অংশকে নিজেদের বলে দাবি করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল সরকার। জাতীয় আইনসভায় সর্বসম্মতভাবে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবও পাস করেছে নেপাল সরকার।

জুনেই নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে নেপাল। আর সেই মানচিত্রে নেপালের অন্তর্গত হিসেবে দেখানো হয় লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরা এলাকাকে। কাঠমান্ডুর দাবি, ১৮১৬ সালে ইঙ্গ-নেপাল যুদ্ধের পর সুগলি চুক্তি অনুসারে লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি এবং লিপুলেখ কোনোভাবেই ভারতের নয়।

কীভাবে শুরু বিবাদের
ভারত-তিব্বত সীমান্তে লিপুলেখ ও উত্তরাখণ্ডের সংযোগকারী ৮০ কিলোমিটার রাস্তা উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার পরই নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল। আর এরপর পিথোগড় জেলা বরাবর নেপাল সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছিল কাঠমান্ডু, যাতে উত্তেজনা বাড়ে।

নেপাল ও ভারতের বিতর্কের সূত্রপাত গত মে মাস থেকে। উত্তরাখণ্ডের ধরচুলা থেকে চীন সীমান্তঘেঁষা লিপুলেখ পর্যন্ত ভারত রাস্তা তৈরি করছিল। এ নিয়ে প্রথম আপত্তি জানায় কাঠমান্ডু। তার পরই ওই ভূখণ্ড তাদের বলে দাবি করে ক্ষমতাসীন সরকার। নয়াদিল্লি জানায়, ওই অঞ্চল ভারতের অন্তর্ভুক্ত। এর পরই দেশের মানচিত্র বদলানোর প্রক্রিয়া শুরু করার পাশাপাশি ওই এলাকার সীমান্ত বরাবর ৭টি নতুন সীমান্তচৌকি তৈরি করে নেপাল। এরপর নেপালের সংসদে মানচিত্র সংশোধনী বিলে উত্তরাখণ্ডের কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরার সঙ্গে লিপুলেখ গিরিপথও নেপালের ভূখণ্ড বলে দাবি করা হয়। পার্লামেন্টে পাসও হয়ে যায় সেই মানচিত্র সংশোধনী বিল।