মিয়ানমারে সেভ দ্য চিলড্রেনের দুই কর্মীর পোড়া মরদেহ উদ্ধার

গত শুক্রবার মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় কায়া রাজ্যে এই হামলা হয়
ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর হামলায় নিজেদের দুজন কর্মীর নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। খবর বিবিসির।

দাতব্য সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় কায়া রাজ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীর হামলার পর নারী ও শিশুসহ ৩৫টির বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সৈন্যরা মানুষজনকে ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে জোর করে, তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে এবং অন্যদের লাশ পোড়ানোর আগে হত্যা করে বলে দাবি সংস্থাটির। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দাতব্য সংস্থার এ দাবি অস্বীকার করেছে।
কায়া রাজ্যের হাপ্রুসো নামক ছোট একটি শহরে সামরিক বাহিনীর ওই হামলার পর প্রকাশ হওয়া ছবিতে পুড়ে যাওয়া যানবাহন যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা যায়। জান্তাবিরোধী অন্যতম বৃহৎ গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স বলেছে, নিহত ব্যক্তিরা বিদ্রোহী নয়, বরং সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে চাওয়া বেসামরিক নাগরিক। কারেন ন্যাশনাল ডিফেন্সের একজন কমান্ডার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘শিশু, নারী, বৃদ্ধ মানুষজনের বিভিন্ন আকারের মরদেহ দেখে আমরা মারাত্মকভাবে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।’

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলছেন, ‘শুক্রবার হাপ্রুসোতে সৈন্যরা ‘সন্দেহজনক উপায়ে’ চলা সাতটি গাড়ি থামানোর চেষ্টা করলে লড়াই শুরু হয়।’ সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, তাঁদের নিহত দুই কর্মী সম্প্রতি বাবা হয়েছেন। তাঁরা শিশুদের জন্য শিক্ষা নিয়ে কাজ করতেন। দুজনই ছুটি উপলক্ষে বাড়ি ফিরছিলেন। এক টুইট বার্তায় দাতব্য সংস্থাটি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও জবাবদিহির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে পদক্ষেপ নেওয়া আহ্বান জানিয়েছে।

হামলার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, সেনাবাহিনীকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করারও আহ্বান জানান।

গত ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী গণবিক্ষোভ শুরু হয়। অভ্যুত্থানের পর জান্তার হাতে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি এবং তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সদস্যরা রয়েছেন। দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে শিশু ও নারীসহ দেশটির শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।