রাজা ভুমিবলের বিদায়ে শোকস্তব্ধ থাইল্যান্ড

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে থাকা থাইল্যান্ডের রাজা ভুমিবল আদুলিয়াদেজ ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজপ্রাসাদ থেকে তাঁর মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়া হয়। কয়েক দিন ধরে ভুমিবল গুরুতর অসুস্থ ছিলেন।
১৯৪৬ সাল থেকে অর্থাৎ সাত দশক ধরে থাইল্যান্ডের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন ভুমিবল। দেশের জনগণের হৃদয়েও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে শ্রদ্ধার আসনে ছিলেন তিনি। দেশটির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট সমাধানে তিনি অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালনকারী হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। রাজার মৃত্যুতে থাইল্যান্ডে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভুমিবলকে কয়েক মাস ধরে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। গত বছরের বেশির ভাগ সময় তিনি হাসপাতালেই কাটিয়েছেন। রোববার মধ্যরাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে প্রাসাদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, রাজার শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল নয়’। এরপর যে হাসপাতালে ভুমিবলের চিকিৎসা চলছিল, সেখানে ভিড় জমান শত শত মানুষ। রাজার শুভকামনায় গোলাপি পোশাক পরে সেখানে অবস্থান করেন বহু নাগরিক। কিডনির জটিলতায় ভুগতে থাকা রাজার হেমোডায়ালাইসিস করার সময় তাঁর রক্তচাপ কমে যায়। পরে কৃত্রিমভাবে তাঁর রক্তচাপ স্বাভাবিক করা হয়েছিল। এরপর থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি।

১৯৪৬ সালে ভাইয়ের মৃত্যুর পর মাত্র ১৮ বছর বয়সে রাজা ভুমিবল থাইল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহণ করেন। চলতি বছরের জুনে তাঁর সিংহাসনে আরোহনের ৭০তম বার্ষিকী পালন করা হয়।
এদিকে ভুমিবলের মৃত্যু শোকাহত থাইল্যান্ডকে হঠাৎ করে গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। কয়েক বছর ধরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও রাজপ্রাসাদ থেকে তাঁর উত্তরসূরি নিয়োগের পরিকল্পনার বিষয়ে জন-গণকে কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি।
যুবরাজ ভুমিবলের একমাত্র ছেলে ৬৪ বছর বয়সী মাহা ভাজিরালংকর্ন। রাজার মৃত্যুর কিছুক্ষণ পরই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচা বলেন, ছেলে ভাজিরালংকর্নকে ভুমিবল তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে গেছেন বলে পার্লামেন্ট জেনেছে।
থাইল্যান্ডে অতীতে বেশ কয়েক বছর সিংহাসনে কাউকে না বসানোর নজিরও রয়েছে। দেশটির জনগণ ভুমিবলের উত্তরসূরি ভাজিরালংকর্নকে কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। কেননা তাঁর ভাবমূর্তি বাবার ধারেকাছেও নেই।