রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকদের ভিসার মেয়াদ বাড়াবে না শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কার পতাকাছবি : রয়টার্স

হাজারো রুশ ও ইউক্রেনীয় নাগরিকের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর নীতি স্থগিত করছে শ্রীলঙ্কা। গতকাল দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দেয়। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ বাহিনী হামলা শুরুর পর দুই দেশের পর্যটকদের জন্য ভিসা নীতি পরিবর্তন করেছিল দেশটি।

অভিবাসন কমিশনার-জেনারেল হার্শা ইলুকপিটিয়া বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘সরকার আর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন গ্রহণ করবে না।’ তিনি ৭ মার্চের মধ্যে যাঁদের দেশে ফেরার কথা, তাঁদের ওই সময়ের মধ্যে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

অভিবাসন কর্মকর্তা আরও বলেন, ফ্লাইট পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়েছে। দেশে ফিরে যেতে এখন আর কোনো বাধা নেই।

শ্রীলঙ্কা সরকারের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে দেশটিতে ২ লাখ ৮৮ হাজার রুশ ও ২০ হাজার ইউক্রেনীয় পর্যটক এসেছেন। তবে তাঁদের মধ্যে ৩০ দিনের ভিসার মেয়াদ নিয়ে এসে কতজন ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছেন, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আসা অনেক মানুষ সেনাবাহিনীতে জোর করে অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে শ্রীলঙ্কায় স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ সেখানে রেস্তোরাঁ খুলে বা নৈশক্লাব খুলে ব্যবসা শুরু করেছেন।

এর আগে শ্রীলঙ্কা উপকূলের উনাওটুনা শহরে একটি রুশ নৈশক্লাব ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ওই নৈশক্লাবে কেবল শ্বেতাঙ্গদের জন্য অনুষ্ঠান আয়োজনের সুযোগ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। সরকার তাই পর্যটন খাতে আয় বাড়াতে ৩০ দিনের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসার অনুমোদন দিতে শুরু করে। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক দেনার কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় দেশটি। ফলে শ্রীলঙ্কা ঋণখেলাপি হয়। এ সময় দেশটির রাস্তায় হাজারো মানুষ বিক্ষোভ শুরু করেন। তিন মাস পর দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে পদত্যাগে বাধ্য হন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দেশটির অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে ২৯০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেয়। এতে দেশটিতে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকট থেকে উত্তরণ ঘটে।