মাসে একটি করে স্বর্ণদানা জমাচ্ছেন চীনা তরুণেরা

ছোট ছোট স্বর্ণদানায় চীনের তরুণদের আগ্রহ বাড়ছেছবি: এএফপি

চীনের তরুণদের মধ্যে সোনার তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কথা মাথায় রেখে তাঁদের মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণদানা (গোল্ড বিনস) কিনে রাখার প্রবণতা বাড়ছে। মুখে খাওয়া বড়ির মতো স্বর্ণের এসব দানার ওজন এক গ্রাম করে। এগুলোর দাম স্থানীয় মুদ্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ ইউয়ান, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ হাজার ১৮৪ টাকা থেকে ৯ হাজার ২৭৬ টাকা।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক গণমাধ্যম স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের জেড প্রজন্মের (১৯৯৬ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী) লোকজনের মধ্যে প্রতি মাসে একটি স্বর্ণদানা কিনে রাখার নতুন চল শুরু হয়েছে।

মানবসভ্যতার ইতিহাসে স্বর্ণে বিনিয়োগের বিষয়টিকে সবচেয়ে জনপ্রিয় বলে মনে করা হয়। ঐতিহ্যের দিক থেকে চীনের মধ্যবয়সী ও বয়স্ক লোকজনের মধ্যে সোনার প্রতি বেশি আগ্রহ দেখা যায়। কিন্তু এখন দেশটির জেড প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হিসেবে সোনার জিনিসপত্রের প্রতি ঝোঁক দেখা যাচ্ছে। এর প্রাথমিক কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, এর সহজপ্রাপ্যতা ও নাগালের মধ্যে থাকা দাম।

চীনের গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেশটির একটি গয়না ব্র্যান্ডের ব্যবসা উন্নয়ন কর্মকর্তা ফ্রেড কিউই বলেছেন, ছোট ছোট এক গ্রাম ওজনের সোনার দানা জেড প্রজন্মের ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয়। কিন্তু তরুণ দম্পতি আর মধ্যবিত্তদের পছন্দ ১০ থেকে ৫০ গ্রাম ওজনের সোনার বার।

প্রচলিত বিনিয়োগব্যবস্থায় আস্থার ঘাটতিও সোনার পেছনে ছোটার আরেকটি কারণ। গত বছর চীনের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম টিমল ও তাওবাও জানায়, ১৯৯০ সালের পর জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাই সোনার গয়না কেনেন বেশি। আরেক জরিপেও একই তথ্য দেখা যায়। তাতে দেখা যায়, ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যেই খাঁটি সোনার গয়না কিনে রাখার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

গোয়াংজুর বাসিন্দা অ্যানি ফ্যাং বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে অন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদের তুলনায় সোনা বেশি বিশ্বাসযোগ্য। অনেক মানুষ কেন এর পেছনে ছুটছে, তা আমি বুঝতে পারি।’

চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বরে সোনা, রুপা ও গয়না বিক্রি তার আগের ছয় বছরের তুলনায় বেশি ছিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আগামী বছরগুলোয় চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কমবে তাই সেখানে সোনার চাহিদা আরও বাড়তে থাকবে।