পাকিস্তানের সঙ্গে আফগান তালেবানের সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতের আমির হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকোলাজ: প্রথম আলো

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এপ্রিলে যখন আফগানিস্তান সফরে গিয়ে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখন রাজনীতি বিশ্লেষকেরা বলেছিলেন, শত্রুতে পরিণত হওয়া দুই পুরোনো মিত্রদেশ হয়তো নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্গঠন করতে চাইছে।

চীনের মধ্যস্থতায় মে ও আগস্ট মাসে আরও দুই দফা বৈঠক পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক পুনর্গঠনের সম্ভাবনাকে আরও জোরালো করেছিল।

কিন্তু গত সপ্তাহে বিরোধপূর্ণ সীমান্তগুলোতে দুই দেশের তীব্র সংঘর্ষ কূটনৈতিক ওই প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণ উল্টে দিয়েছে।

ইসলামাবাদ বলেছে, তারা দুই শতাধিক তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে তালেবান সরকার বলেছে, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে।

উভয় পক্ষে হতাহতদের এই সংখ্যা স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে, বছরের শুরুতে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তা কতটা ভঙ্গুর ছিল।

তালেবানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অভিযোগ, তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে।

বিশেষ করে পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে। সম্প্রতি সেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার তীব্রতা বেড়েছে এবং হামলায় ডজনখানেক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। তালেবান পাকিস্তানের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল, গুলিও চলে।

তালেবান সরকার বলেছে, কাবুলে ওই হামলা এবং আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের একটি প্রদেশে হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত আছে। তালেবান সরকার এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

কাবুলে ওই হামলায় পাকিস্তান নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি।

বৃহস্পতিবারের ওই হামলা নিয়ে দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যে শনিবার রাতে সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।

পাকিস্তান স্বীকার করেছে, সংঘর্ষে তাদের অন্তত ২৩ সেনা নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। দেশটি আরও বলেছে, তারা আফগান ভূখণ্ডে ২১টির বেশি সেনা চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত ও বুধবার ভোরেও কান্দাহারে হামলার ঘটনা ঘটে। সেখানে ১৫ জন আফগান নিহত হন।

ইসলামাবাদ বলেছে, তারা দুই শতাধিক তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে তালেবান সরকার বলেছে, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে।

যে কারণে সীমান্তে সংঘর্ষ

পাকিস্তান যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আফগানিস্তান থেকে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ করছে, তাদের মধ্যে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) ইসলামাবাদ সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করে।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে [আফগানিস্তানে] কথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের’ সময় টিটিপি গড়ে ওঠে এবং বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে।

টিটিপি কঠোর শরিয়াহ আইন চালু করতে এবং নিজেদের কারাবন্দী সদস্যদের মুক্তি চায়। পাকিস্তানের যেসব উপজাতীয় অঞ্চল খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, টিটিপি তার বাতিল দাবি করেছে।

আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে টিটিপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে উভয় দলের মতাদর্শ অভিন্ন। ইসলামাবাদ কাবুলের বিরুদ্ধে টিটিপি ছাড়াও বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশের (আইএসকেপি) মতো অন্যান্য গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করে থাকে।

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর টিটিপির হামলা অনেক বেড়ে গেছে এবং আরও বাড়ছে।

আমাদের তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত এক বছরে টিটিপি ন্যূনতম ৬০০ আক্রমণ করেছে বা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। আর ২০২৫ সালে হামলার সংখ্যা এরই মধ্যে ২০২৪ সালের মোট সংখ্যাকে অতিক্রম করে গেছে। ...
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা (এসিএলইডি) বলেছে, ‘আমাদের তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত এক বছরে টিটিপি ন্যূনতম ৬০০টি আক্রমণ করেছে বা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। আর ২০২৫ সালে হামলার সংখ্যা এরই মধ্যে ২০২৪ সালের মোট সংখ্যাকে অতিক্রম করে গেছে।’

গত কয়েক দিনে কয়েকটি হামলায় দুই ডজনের বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে সেনা কর্মকর্তারাও রয়েছেন। এ ধরনের সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে ৮ অক্টোবর।

চীন, ইরান ও রাশিয়ার মতো আঞ্চলিক প্রভাবশালী দেশগুলো তালেবান সরকারকে বারবার তাদের দেশ থেকে টিটিপি এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে বলছে।

পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত সীমা ইলাহি বালুচ বলেছেন, পাকিস্তানে হামলা চালাতে [সন্ত্রাসীদের] আফগানিস্তানের ভূমি ব্যবহার করতে না দেওয়ার বিষয়টি ইসলামাবাদ এখনো তালেবানকে বোঝাতে পারেনি।

কর্মজীবনে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক নিয়ে অনেক অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় অংশ নিয়েছেন এই কূটনীতিক।

সাবেক এই নারী কূটনীতিক আরও বলেন, উভয় পক্ষকেই বুঝতে হবে, এমন সংঘাত দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে ক্ষুণ্ন করে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

পাকিস্তান ও আফগানিস্তান উভয় দেশের ওপর চীনের প্রভাব রয়েছে। কূটনীতির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক মেরামত করতে চাইলে চীন মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

চীন, ইরান ও রাশিয়ার মতো আঞ্চলিক প্রভাবশালী দেশগুলো তালেবান সরকারকে বারবার তাদের দেশ থেকে টিটিপি এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে বলছে।

ইসলামাবাদের নিউ নরমাল কী

আফগানিস্তানকে পাকিস্তান যেসব হামলার উৎস বলে দাবি করে, সেসব হামলায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। এ সংখ্যা ক্রমেই এতটা বড় হচ্ছে যে ইসলামাবাদের পক্ষে তা উপেক্ষা করা কঠিন হয়ে উঠছে বলে মত বিশ্লেষকদের।

ইসলামাবাদভিত্তিক চিন্তক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (সিআরএসএস) বলেছে, এ বছরের প্রথম ৯ মাসে ২ হাজার ৪০০ জনের বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। হামলা ও নিহতের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে এক দশকের মধ্যে এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে রক্তাক্ত বছরে পরিণত হতে চলেছে।

সশস্ত্র উগ্রপন্থাবিষয়ক একজন গবেষক এবং সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো আবদুল বাসিত বলেন, ইসলামাবাদ এমন একটি নিউ নরমাল বা নতুন বাস্তবতা নির্ধারণের চেষ্টা করছে, যেখানে আফগানিস্তান থেকে যারাই (টিটিপি বা অন্য কোনো গোষ্ঠী) হামলা চালাক, তার জন্য কাবুলকে মূল্য চুকাতে হবে।

পাকিস্তানের এই কৌশল অনেকটাই ভারতের মতো বলে মনে করেন বাসিত।

গত এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার পর নয়াদিল্লি যেভাবে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে হামলা চালায় এবং সন্ত্রাস দমনের নামে ওই হামলাকে বৈধ দেখানোর কৌশল নেয়, অনেকটা তেমন।

আরও পড়ুন
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি
ছবি: রয়টার্স

তবে আবদুল বাসিত বলেন, দুই দেশের কৌশলের মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। সেটা হলো সামরিক শক্তির পার্থক্য। দুই দেশের সামরিক শক্তিতে বড় পার্থক্য রয়েছে। এখানে পরিস্থিতি তাই ভারত ও পাকিস্তানের মতো নয়।

এই গবেষক মনে করেন, পাকিস্তান মে মাসে ভারতের আক্রমণের পাল্টা জবাব দিতে পেরেছে। কিন্তু তালেবান যোদ্ধাদের যতই দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা থাকুক, তাদের পক্ষে পাকিস্তানের প্রশিক্ষিত সেনাদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া সম্ভব নয়।

পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমের রেজা আল-জাজিরাকে বলেন, পাকিস্তানের নীতিনির্ধারণী মহলে আফগানিস্তানের প্রতি ধৈর্য কমে আসছে।

আমের রেজা বলেন, কিছু সংলাপ অনিবার্য হলেও দ্রুত বড় সাফল্যের আশা না করাই ভালো। বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বেলায় পাকিস্তান স্পষ্টতই এগিয়ে। সর্বশেষ সংঘর্ষেও তা দেখা গেছে। পাকিস্তান চাইলে আফগানিস্তানের আরও বড় ক্ষতি করতে পারত। কিন্তু তারা বিস্তৃত হামলা থেকে বিরত থেকেছে।

পাকিস্তানে হামলা চালাতে [সন্ত্রাসীদের] আফগানিস্তানের ভূমি ব্যবহার করতে না দেওয়ার বিষয়টি ইসলামাবাদ এখনো তালেবানকে বোঝাতে পারেনি।....
সীমা ইলাহি বালুচ, পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত
আরও পড়ুন

ওই সীমান্ত সংঘর্ষের পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো তালেবান সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অথচ প্রায় ২৫ বছর ধরে তালেবানের প্রধান সমর্থক ছিল ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা আরও আশা করি, একদিন আফগান জনগণ মুক্ত হবে এবং তারা দেশ পরিচালনার জন্য একটি প্রকৃত প্রতিনিধিত্বশীল সরকার পাবে।’

এই বিবৃতির মাধ্যমে ইসলামাবাদ মূলত আফগানিস্তানে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে বলে মত সীমা ইলাহি বালুচের। গবেষক বাসিত অবশ্য মনে করেন, যে ভাষায় বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেটা বেশ গুরুত্ব বহন করে।

এই গবেষক বলেন, বিবৃতির ভাষা থেকে এই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, যদি বর্তমান তালেবান সরকার পাকিস্তানের বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগগুলো উপেক্ষা করে যায়, তবে ইসলামাবাদ সম্ভবত আফগানিস্তানের তালেবানবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন জানাতে প্রস্তুত থাকবে।

আরও পড়ুন

নয়াদিল্লির প্রভাব কী

প্রথমবারের মতো ভারত সফরে গেছেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। অনেকে পাকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের সপ্তাহান্তের সীমান্ত সংঘর্ষের সঙ্গে মুত্তাকির ভারত সফরের যোগসূত্র খুঁজছেন।

চার বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে তালেবান আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর এটাই ঊর্ধ্বতন কোনো তালেবান নেতার প্রথম নয়াদিল্লি সফর।

মুত্তাকির ওপর জাতিসংঘের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে এক সপ্তাহের জন্য ওই নিষেধাজ্ঞায় ছাড়পত্র পেয়েছেন তিনি।

৯ অক্টোবর মুত্তাকি ভারত সফরে গেছেন, আজ ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে আছেন তিনি। এই সফরে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ইসলামাবাদ মুত্তাকির এ সফরের ওপর গভীর নজর রাখছে।

গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে কয়েক বছরের আগপর্যন্তও তালেবানকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার প্রক্সি বাহিনী মনে করত ভারত। তালেবান ও তাদের মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠী আফগানিস্তানে ভারতের কূটনৈতিক মিশনে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিল ভারত।

আরও পড়ুন
ইসলামাবাদ বহু বছর ধরে অভিযোগ করছে, নয়াদিল্লি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। এ জন্য আফগানিস্তানের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী নয়াদিল্লি থেকে অর্থ ও সহায়তা পাচ্ছে। ভারত এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

কিন্তু তালেবান নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সুযোগ নিচ্ছে নয়াদিল্লি। মুত্তাকির ভারত সফর এর প্রমাণ।

ইসলামাবাদ বহু বছর ধরে অভিযোগ করছে, নয়াদিল্লি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। এ জন্য আফগানিস্তানের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী নয়াদিল্লি থেকে অর্থ ও সহায়তা পাচ্ছে। ভারত এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত সীমা বালুচ বলেন, এখন ইসলামাবাদকে তার পশ্চিম ও পূর্ব দুই দিকের সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, কোনো দেশের পক্ষে দুই দিকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কঠিন ব্যাপার।

কয়েকজন বিশ্লেষক কাবুলে গত বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণ নিয়ে পাকিস্তানের দায় স্বীকার করা বা অস্বীকার না করার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

পাকিস্তানের এ [অস্পষ্ট] অবস্থান তাদের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে মনে করেন ইসলামাবাদভিত্তিক গবেষণা সংস্থা জিওপলিটিক্যাল ইনসাইটসের প্রধান ফাহাদ নাবিল।

বাসিতও মনে করেন, ইসলামাবাদের কৌশল নিয়ে যেসব বড় প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলোর উত্তর এখনো অজানা।

বাসিত প্রশ্ন করেন, ‘এখানে মূল লক্ষ্যটা আসলে কী? এসব হামলা কি আফগান তালেবানদের হিসাব-নিকাশকে পাল্টে দিয়ে টিটিপির বিরুদ্ধে তাদের পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত করবে, নাকি এটি তাদের টিটিপির আরও ঘনিষ্ঠ হতে উদ্বুদ্ধ করবে?’

বাসিত বলেন, ‘আপনি যখন শক্তির ব্যবহার করবেন, নিশ্চয়ই তার কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকবে। পাকিস্তান আফগানিস্তানে এ হামলার মাধ্যমে কী অর্জন করতে চাইছে?’

এই গবেষকও মনে করেন, কোনো দেশের পক্ষে [সীমান্তে] দুই দিকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন