ধ্বংসস্তূপে প্রস্রাব খেয়ে বেঁচে ছিল তুর্কি কিশোর

ভূমিকম্পের ৯৪ ঘণ্টা পর আদনান মুহাম্মেত কোরকুতকে উদ্ধার করা হয়
ছবি: টুইটার

ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়েছিল তুর্কি কিশোর আদনান মুহাম্মেত কোরকুত। সেখানে তাকে ৯৪ ঘণ্টা কাটাতে হয়েছে। জীবন বাঁচাতে খেতে হয়েছে নিজের প্রস্রাব। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া এ কিশোর হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন।

আদনান মুহাম্মেত কোরকুত এখন গাজিয়ানতেপ এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভিডিও কলিং অ্যাপ ফেসটাইম ব্যবহার করে এবিসিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছে সে। কোরকুত বলেছে, ভূমিকম্পের সময় সে ঘুমাচ্ছিল। বাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার পর ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়ে সে। মায়ের গর্ভে ভ্রূণ যে অবস্থায় থাকে, তেমন করেই হাত–পা ভাঁজ করে সেখানে শুয়ে ছিল সে।

ওই কিশোর বলেছে, আটকে পড়ার পর বেঁচে থাকার জন্য সে তার নিজের প্রস্রাব খেয়েছে। বাড়িতে থাকা ফুলগুলো খেয়েছে।

কোরকুত আরও বলেছে, ফোনে প্রতি ২৫ মিনিট পরপর অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছিল, যেন সে ঘুমিয়ে না পড়ে। দুই দিন পর ফোনের চার্জ ফুরিয়ে যায়।

উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছানোর পর কোরকুত তাদের গলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিল। কিন্তু তার মনে হচ্ছিল উদ্ধারকারীদের কানে তার কণ্ঠস্বর পৌঁছাচ্ছে না। উদ্ধার তৎপরতা শেষ হওয়া পর্যন্ত টিকে থাকবে কি না, তা ভেবে ভয় পাচ্ছিল সে।

অবশেষে ভূমিকম্পের চার দিন পর সে উদ্ধার হয়। কোরকুত বলেছে, ‘যে মানুষেরা এখানে এসে আমাকে বাঁচিয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

তুরস্ক ও সিরিয়ায় গত সোমবার আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত মানুষের সংখ্যা ইতিমধ্যে ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তুরস্কে সোমবারের ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ৬১৭ জন নিহত হয়েছেন।

১৯৩৯ সালের পর এটি দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। সোমবারের ভূমিকম্পে সিরিয়ায়ও এ পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।